১নভেম্বর ২০২১, ঢাকা ব্যুরো অফিস, দৈনিক রাঙামাটি।
আজ বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে সম্প্রতি শারদীয় দূর্গাপূজায় কুমিল্লা চৌমুহনী, রংপুরের পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার প্রতিবাদে ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিরোধী প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
সভার শুরুতে প্রতিবাদী গান পরিবেশন করে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী। সভায় বক্তব্য রাখেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী। সভায় সংহতি জানান ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুদ্দীন আহমেদ মানিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন সাদেকা হালিম, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাড. সালমা আলী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য, প্রজন্ম একাত্তরের আসিফ মুনীর, হিন্দু, বৌদ্ধ, খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ, স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট এর নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার, আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা। সমাবেশে ঘোষণা পাঠ করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নিনা গোস্বামী।
সভায় বক্তারা বলেন, আজ সময় এসেছে এসকল ঘটনা কেন বারবার ঘটছে তা খতিয়ে দেখার। সমাজ থেকে এই সহিংসতা চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধ করতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়তে আইসিটির ৫৭ ধারা বাতিলসহ দাবি জানান। পাশাপাশি তারা আরো বলেন শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে, সকল ধর্মের মানুষকে সমান মর্য়াদা দিতে হবে, জনপ্রতিনিধি, জনগণ সকলকে অসাম্প্রদায়িক হতে হবে।
সভায় সংহতি প্রকাশ করে বক্তারা আরো বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা করছে তাদের এদেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানান। যারা বিভিন্ন ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মীয় মাধ্যমে বিদ্বেষ তৈরি করছে, সহিংসতার সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে। সংবিধানের ৪টি স্তম্ভের উল্লেখ করে বলেন বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা আমাদের সামগ্রিক জীবনে কমে আসছে। আজ সকল কিছুতেই ধর্ম নিয়ে আসা হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আজ বাঙালি সংস্কৃতির চর্চার সুযোগ সীমিত হয়ে আসছে। রাজনীতিতে আজ ধর্ম নিয়ে আসা হচ্ছে। আমরা যত সমালোচনাই করি না কেন, রাজনীতিকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত করতে না পারলে প্রশাসন, সংস্কৃতি, অর্থনীতিসহ আমাদের সমগ্র সমাজ কাঠামো কখনোই অসাম্প্রদায়িত হতে পারবে না।
সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ১২ দফা দাবি জানিয়ে সমাবেশে ঘোষণা পাঠ করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নিনা গোস্বামী। সমাবেশ শেষে শহীদ মিনার থেকে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করা হয়। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপপরিচালক শাহনাজ সুমী।
সম্পাদনা- শামীমুল আহসান
ঢাকা ব্যুরো প্রধান, দৈনিক রাঙামাটি।