আলমগীর মানিক, ১০ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : আগামী একুশে ফেব্রুয়ারীতে রাঙামাটি জেলায় যাতে করে সকলেই যথাযথভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারে এবং এতে করে যাতে জাতীয় পতাকার কোনো প্রকার অবমাননাকর ব্যবহার না হয়, সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনকে উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের একমাত্র মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু।
রোববার রাঙামাটিতে আয়োজিত মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় তিনি এই আহবান জানান । এমপি চিনু বলেন, ফেসবুক এতোবেশি পরিচিতি লাভ করেছে যে, জনগণ সকলেই এতে অংশগ্রহণ করে তাদের বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার অবাধ ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে একটি বিশেষ মহল পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক পরিস্থিতিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। যা আমাদের কারো কাম্য নয়। এই ধরনের অপকর্মের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ন পরিস্থিতিকে অশান্ত করার মানসে দেশ-বিদেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ের একটি বিশেষ মহল। এই ফেসবুক ব্যবহার করে সম্প্রতি সময়ে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের অপকর্মের কারনে রাঙামাটি তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে চলেছে। তাই এই অশুভ চক্রকে চিহ্নিত করে আইনে আওতায় আনার প্রয়োজন এবং আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সেটি-ই করতে যাচ্ছে। মহিলা সংসদ জানান, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এই ব্যাপারটি নিয়ে আমি কথা বলেছি। আমাদের পুলিশ বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট্য বিভাগ এই ব্যাপারে কাজ করছে এবং আগামী কিছুদিনের মধ্যেই এর সুফল আমরা পাবো বলে আশা করছি।
আইন শৃঙ্খলা ও সমন্বয় বিষয়ক মাসিক এই সভায় রাঙামাটির জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, ডিজিএফআই রাঙামাটি জেলার অধিনায়ক কর্ণেল এমদাদ উল্লাহ ভূইয়া-পিএসসি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোঃ শহিদ উল্লাহ, জেলা সিভিল সার্জন ডা. ¯েœহ কান্তি চাকমা, রাঙামাটি সেনাজোনের জেডএসও মেজর আরিফুল ইসলাম, সার্কেল এএসপি চিত্ত রঞ্জন পাল ও রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল প্রমুখ। মাসিক সভাটি সঞ্চালনা করেন অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তানভীর আযম সিদ্দিকী।
এসময় রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ ও তাদের প্রতিনিধিবর্গসহ জেলার বিশিষ্ট্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে আইনশৃঙ্খলা সভায় নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। পরে সকলের মতামত শ্রবণ করে সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন জানান, রাঙামাটি জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শীঘ্রই জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলা গুলোতে মোবাইল কোর্টের অভিযান বৃদ্ধিসহ নিয়মিত মনিটরিং আরো বাড়ানোর লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও জেলায় মাদক দ্রব্য অবাধ ব্যবহার বন্ধ, ফিটনেস বিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধসহ অবৈধ গাড়িগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে রাঙামাটি বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ কে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা প্রদান করেন।
এছাড়াও ইন্টারনেট বিড়ম্বনা প্রশমনে রাঙামাটির বিটিসিএল কর্তপক্ষকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। অপরদিকে জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত শহরের তবলছড়িতে নির্মিত ব্রীজটি নির্মানকালীন সময়ে যাতে করে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ব্যবস্থা নিতেও বলেন সভাপতি সামসুল আরেফিন। সভায় জেলা প্রশাসক জানান, রাঙামাটি শিশু পার্কটিকে আধুনিকায়ন করতে এবং এটির মধ্যে ট্রয় মেট্রো রেল স্থাপনে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে উদ্বর্তন কর্তপক্ষের কাছে।
পোস্ট- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান