রাঙামাটিতে তিন পাহাড়ি সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

271

p...3

স্টাফ রিপোর্টার, ১০ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের মধ্যদিয়ে বারংবার আহ্বান করা সত্বেও বর্তমান সরকার আমাদের দাবিগুলো কোন প্রকার আমলে নিচ্ছে না, কর্ণপাত করছে না। তৎপরিবর্তে চুক্তি বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, পাহাড়ীদের বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে বিলিন করে দেওয়ার জন্য নতুন নতুন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে চলেছে সরকার। তার মধ্যে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে জুম্মস্বার্থ পরিপন্থী রাজনৈতিক কেন্দ্র স্থাপনের ষড়যন্ত্রে মেঠে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে পাহাড়িদের তিনটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

রোববার, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও  পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন নামে এই তিনটি সংগঠনে উদ্যোগে রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজের সকল কার্যক্রম স্থগিত করার দাবিতে রাঙামাটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ এই অভিযোগ করেন।

১০ই জানুয়ারী রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ উদ্বোধনের এক বছর পূর্তির দিন এই প্রতিষ্ঠানের বিপক্ষে আয়োজিত উক্ত কর্মসূচিতে পাহাড়ি নেতৃবৃন্দ অভিযোগ জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার ফ্যাসিবাদী রুপ ধারণ করেছে যা আরও একবার সুর্স্পষ্ট রুপ উন্মোচিত হয়েছে রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। প্রশাসনকে ব্যবহার করে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়ে ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে যা পৌরবাসী প্রত্যাখান করেছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা দেখি তিন পার্বত্য জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার যে বেহাল দশা ও কলেজের করুণ অবস্থা, সেগুলোর বিষয়ে কোন ধরনের পদক্ষেপ না নিয়ে পার্বত্যবাসীর বিরোধিতা সত্ত্বেও রাষ্ট্রশক্তির জোরে সরকার এই দুটি প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করার জন্য কেন উঠে পড়ে লেগেছে যা সহজে অনুমেয়। বক্তারা আরো বলেন, ১৯৬৫ স্থাপিত রাঙামাটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ আজ করুণ দশায় রয়েছে। কলেজ বিল্ডিং এর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যে কোন সময় ধ্বসে পড়তে পারে। সরকার তার পূন:নির্মাণ না করে জুম্ম স্বার্থবিরোধী ও চুক্তি পরিপন্থী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে চলেছে। যার ফল কখনোই সুখকর হবেনা। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অবিলম্বে দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং সেই সাথে অনতিবিলম্বে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজের সকল কার্যক্রম স্থগিত করার দাবী জানান তিনি। অন্যথায় যে কোন পরিস্থিতির জন্য সরকারই দায়ী থাকবে বলে হুশিয়ারী দেন পাহাড়ি নেতৃবৃন্দ। পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পারিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বাচ্চু চাকমা’র সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি টোয়েন চাকমা। এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অরুণ ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি কলেজ শাখার সভাপতি আশিকা চাকমা, পিসিপি রাঙামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক রিন্টু চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙামাটি সদর থানা কমিটির সভাপতি পহেল চাকমা প্রমুখ।

এরআগে একটি বিক্ষোভ-মিছিল কালিন্দীপুরস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা কার্যালয় চত্বর থেকে শুরু করে বনরুপা ঘুরে জেলা প্রশাসন কার্যালয় সম্মুখে সমাবেশে মিলিত হয়।

পোস্ট- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান