জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে সুইডেন রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

380

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ড ও সুইডেনের রাষ্ট্রদূত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ড এর রাষ্ট্রদূত নাথাইল কুয়ার্ড এবং সুইডেন এর রাষ্ট্রদূত আলেজেন্ড্রা ব্রেগ ভন লিন্ডা রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সাথে তার অফিসকক্ষে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

দুই দেশের রাষ্ট্রদূত সৌজন্য সাক্ষাতে চেয়ারম্যানকে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এটা তাদের প্রথম সফর। উভয় সরকার উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে জলবায়ু, মানবাধিকার, জেন্ডার বিষয়ে বিভিন্ন দেশে কাজ করে। তারা এখানে এসেছে এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বুঝতে। পার্বত্য চুক্তির আলোকে গঠিত পরিষদগুলো এখানে কিভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করে। করোনাকালীন সময়ে এখানকার মানুষ কিভাবে তাদের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করেছে এ সম্পর্কে তারা জানতে চান।

চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী রাষ্ট্রদূতদ্বয়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইউরোপের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন সম্ভাবনা দেখার জন্য এসেছে, এজন্যে তিনি রাঙামাটিবাসীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূতদ্বয়কে ধন্যবাদ জানান। তিনি সংক্ষিপ্তাকারে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত পরিষদ ব্যবস্থা, হস্তান্তরিত বিভাগ, জেলার উন্নয়ন কর্মকান্ড সমন্বয়, এনজিও সমন্বয় এবং পরিষদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি শান্তিচুক্তির পর ইউএনডিপির মাধ্যমে বিদেশী দাতাদের সহায়তায় পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন জেলার প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল জাতীয়করণ, ম্যালেরিয়া নির্মূলকরণ এবং কৃষিক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে। এছাড়া নারীশিক্ষা উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দাতা সংস্থাদের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন।

তিনি মন্তব্য করেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বনায়ন, এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক প্রশাসনিক ইউনিট তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদসহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে এলাকার মানুষকে সচেতন এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করতে পারলে এধরনের সমস্যা মোকাবেলা করা যাবে।

তিনি শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন সম্পর্কে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের অংশ হিসাবে শান্তিচুক্তি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, ভারত প্রত্যাগত এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানে টাস্কফোর্স এবং ভূমি সমস্যা সমাধানে ভূমি কমিশন সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক সমাধানের অংশ হিসাবে বর্তমান সরকারের সদিচ্ছা এবং প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন হলো এসমস্ত প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি। কিন্তু প্রশাসনিক বা আমলাতান্ত্রিক ধীরগতির কারণে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্রিয়তায় দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি মনে করেন, এই সমস্যাগুলোও খুব শীঘ্রই সমাধান হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন পার্বত্য চট্টগ্রামের দারিদ্রতা বিমোচন এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় সুইজারল্যান্ড এবং সুইডেন সরকার এগিয়ে আসবে।

সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে ইউএনডিপির বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী, সহকারি আবাসিক প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ চাকমা, সুইজারল্যান্ড এবং সুইডেন রাষ্ট্রদূতের সফরসঙ্গী কর্মকর্তাবৃন্দ, পরিষদের সদস্যদের মধ্যে যথাক্রমে নিউচিং মারমা, প্রিয় নন্দ চাকমা, ঝর্ণা খীসা, আছমা বেগম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।