দীপ্ত হান্নান- ৫ জুলাই ২০১৭, দৈনিক রাঙামাটি: জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন, সম্প্রতি পাহাড়ে বাল্য বিবাহ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। নানা পদ্ধতিতে ব্যবস্থা নিয়েও এ প্রবণতা রোধ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, এর জন্য মূলত সামাজিক ও পারিবারিক অসচেতনতাই দায়ী। অভিভাবকদের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো না গেলে এই প্রবণতা রোধ করা সম্ভব হবে না। তিনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে তো বর্তমান সরকারের ভিশন-২০২১ কখনও সাফল্যের মুখ দেখবে না।
রোববার দুপুরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জুলাই মাসের জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখার সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে আমাদের সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। পাহাড়ে বাল্য বিয়ে চরম আকার ধারণ করেছে । নানা কুসংস্কার, অজ্ঞতা ও সচেতনতা অভাবে বাল্য বিয়ে এখনও সমাজে বিদ্যমান। এটা একটি সামাজিক ব্যাধি, এটা রোধ করা দরকার। তিনি আরো বলেন, এখানকার মানুষের মাঝে আর একটি প্রবণতা আমাদের ভিষণ পিড়া দেয়, সেটা হলো ভূমি দখল। সরকারি জায়গা খালি দেখলেই মানুষ তা দখল করতে চায়। এ দখল প্রক্রিয়া রোধ করতে হবে এবং সকলকে এগুলো রক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে হবে। তিনি সভাকে জানান, দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। দুর্গতরা আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করেছে। ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের বিষটির সাথে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র জড়িত। এটা সময় লাগবে, তবে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
সভায় পুলিশ সুপার মোঃ সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, আমরা একটি মর্মান্তিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছি। কিন্তু ভেবে দেখুন এর পিছনেও অসচেতনতা দায়ী। ১৩ জুন ঘটনার একদিন আগেও শহরে মাইকিং করে এলার্ট করা হয়েছিল। লোকজন সচেতন হলে হয়তো সম্পদের ক্ষতি হতো কিন্তু এতো প্রাণহানি ঘটতো না। তবে এতবড় ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সচেতন ও নিরাপদে থাকার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। রাঙামাটি একটি সৌন্দর্য্যে ঘেরা পর্যটন শহর। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোনভাবেই শহরের সৌন্দর্য্য নষ্ট না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ফেসবুকে যে বা যারা ফেইক আইডি খুলে বিভিন্ন উষ্কানীমুলক কথাবার্তা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান এর সভাপতিত্বে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, সিভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোয়াজ্জম হোসাইন, জেলা নির্বাচন অফিসার মো. নাজিম উদ্দিন, পৌরমেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. সুমনী আক্তার, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রতিনিধি, স্কাউট কমিশনার নুরুল আবছার, সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে, সাংবাদিক চৌধুরী হারুনুর রশিদ প্রমূখ। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যানগণ, উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মাদক দমন অভিযান জোরদার করা, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, যত্রতত্র রাস্তা দখল করে মালপত্র রাখা, শব্দ দূষন, বিদ্যুৎ ও পানির বকেয়া বিল, বাজার ব্যবস্থাপনা, রাস্তা প্রসস্তকরণ ও জঙ্গিবাদ রোধের বিষয়েও আলোচনা হয় ।
পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান ।