পাহাড়ধসে আলীকদম-থানচি সড়কে যানচলাচল বন্ধ

439


নুরুল কবির- ৫ জুলাই ২০১৭, দৈনিক রাঙামাটি:  সমুদ্র পৃষ্ট থেকে ২৫০০ ফুট উঁচুতে পাকা সড়ক। বলা যায় দেশের একমাত্র উঁচু পাকা সড়ক। থানচির ডিম পাহাড় নামক স্থান দিয়ে সড়কটি আলীকদম উপজেলায় চলে গেছে। ডিম্বাকৃতির হওয়ায় পাহাড়টি নাম ডিম পাহাড় রেখেছে স্থানীয়রা। আঁকা-বাকা উঁচু সর্পিল সড়ক। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে উঁচু হওয়ায় মাঝেমধ্যে মেঘ ছোয়া যায়। স্থানীয় ও পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় স্থান থানচি-আলীকদম সড়ক। থানচি থেকে আলীকদম উপজেলা পর্যন্ত সংযোগ সড়কটি ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। গত ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসে সড়কটিতে বিশাল ক্ষতিসাধন হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসে রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। কোথাও কোথাও বিশালভাবে কাপেটিং উঠে গেছে। ফলে যান চলাচল বন্ধ আছে দীর্ঘদিন ধরে। রাস্তার এমন বেহাল দশার কারণে

গত ঈদে স্থানীয় ও বাইরে থেকে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটক আসেনি। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কাচামালও বিক্রি করতে পারছেনা লোকজন। তাই দ্রুত রাস্তাটি মেরামতের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। জানা গেছে, গত বছর ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই উঁচু সড়কটি উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর ১৬ ও ১৭ প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) সড়কটি নির্মাণ করে। এই কাজে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১২০ কোটি টাকা। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে সড়কটির উচ্চতা প্রায় ২ হাজার ৫০০ ফুট। থানচি থেকে আলীকদম উপজেলা পর্যন্ত সংযোগ সড়কটির দৈর্ঘ্য ৩৩ কিলোমিটার। ২০০৬ সালে সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালে এসে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নির্মাণ কাজ শেষ করার পর সড়ক ও জনপদের কাছে হস্তান্তর করেছে। সড়কটি নির্মাণের পর দেখতে আসা যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়কটি পর্যটন শিল্পে বিশেষ অবদান রাখবে বলে মত প্রকাশ করেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত ১২ ও ১৩ জুনে ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসে সড়কটির বিভিন্ন জায়গা ফাটল ধরেছে। ২২টি পয়েন্টে বিশালকার কাপেটিং উঠে গেছে। ১৯টি জায়গায় পাহাড় ধসে রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। থানচি’র প্রেস ক্লাবের সভাপতি অনুপম মার্মা জানান, সড়কটি ৩৩ কিলোমিটার আমি সরেজমিন পরিদর্শন করে অন্তত: ২২টি পয়েন্টে কার্পেটিং সমতে ভাঙ্গন ও ১৯ স্থনে পাহাড় ধসে রাস্তা ব্লক হওয়ার চিত্র লক্ষ্য করেছি। তিনি বলেন, সড়কটি নির্মাণের পর সড়ক রক্ষায় বিভিন্ন স্থানে রিটার্নিং দেয়াল দেয়া হলেও তা এখন ধসে গেছে।

এ ব্যাপারে আলীকদম উপজেলার নির্বাহীকর্মকর্তা মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আলীকদম-থানচি সড়কটিতে বড় ধরনের ধস হয়েছে। ধসের কারণে ছোট-বড় সব যানচলাচল বন্ধ আছে। সড়কটি কবে নাগাদ যান চলাচলের জন্য উপযোগী করা যাবে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না তিনি।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান ।