স্টাফ রিপোর্টর- ৪ ডিসেম্বর ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি: তিন পার্বত্য জেলায় বিগত তিন দশকে শান্তিবাহিনীর মাধ্যমে ৩৫ হাজার বাঙালি হত্যার জন্য শান্তিবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ ও জনসংহতি সমিতির চেয়ারম্যান সন্তুুলারমার বিচার করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও রাঙামাটি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার জনাব মনিরুজ্জামান মনির বর্তমান সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন। তিনি আজ সংগঠনের ঢাকাস্থ কার্যালয়ে তিন পার্বত্য জেলা থেকে আগত তৃণমূল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতি,সম্পাদক ও ঢাকায় অবস্থানরত সমঅধিকার আন্দোলন কর্মীদের এক জরুরী সভায় এ দাবি জানান।
তিনি বলেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের এক ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। সরকারের লাভজনক পদে থেকে যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করার পরেও সন্তুুলারমা দেশে বিদেশে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত আছেন। ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কাছে সন্তুু প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছিলেন এবং বিদ্রোহী অস্ত্রধারী উপজাতিয় যুবকদেরকে বাংলাদেশের মূল শ্রোতধারায় ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছিলেন। বিনিময়ে তৎকালীন সরকার তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে মৃত্যুদন্ড না দিয়ে বিশেষ অনুকম্পা দেখিয়ে মুক্তি দিয়েছিলেন।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সন্তুুলারমা আবারও অস্ত্রসস্ত্রসহ আত্মসমর্পন করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছিলেন। বিনিময়ে সরকার তাকে একযুগেরও বেশিকাল ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রেখে কোটি কোটি টাকার সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের একদশমাংশ ভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম। এই ভূমির মালিকানা ১৬ কোটি বাঙালির। জনসংহতি সমিতি কিংবা ইউপিডিএফকে পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫০৯৩ বর্গমাইল ভূমির কোনরূপ মালিকানা বিট্রিশ, পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশের জনগণ দেয় নাই। কাজেই সন্তুুলারমাকে জুম্মল্যান্ড নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী চক্রান্ত থেকে সরে আসাতে হবে।
তিনি বলেন, সন্তুুলারমা গত ২ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সমাবেশে পরোক্ষভাবে পার্বত্য বাঙালিদের বিরুদ্ধে আবারও অস্ত্র ধরে হত্যা কান্ড চালানোর হুমকি দিয়েছেন। যা খুবই দুঃখজনক। এ ধরনের হুমকি দিয়ে সন্তুুলারমা নিজেকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে পার্বত্য চট্টগ্রামে অরাজকতা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি দেশের স্বার্থে তাকে আইনের আওতায় এনে তার উচিৎ বিচারের করা হোক।
সভায় সমঅধিকার আন্দোলন নেতৃবৃন্দ বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ নামধারী উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা যাতে করে কোনরূপ বাধা প্রদান না করতে পারে সেজন্য রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা প্রশাসনের প্রতি বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এছাড়া আগামী ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি সকল শাখা সংগঠনর অনুষ্ঠান পালনের সিদ্ধ্যান্ত গ্রহণ করা হয়।
পোস্টকরেন, শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।