বনরূপা বাজারে চাঁদার বিনিময়ে দুই গ্রুপ ফুটপাত দখলে রাখছে বলে অভিযোগ

477

॥ ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি ॥
বনরূপা বাজার সমিতিগুলোর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। কিছু অর্থ দিলেই বাজারের ফুটপাত দখল করে কাঁচামাল বিক্রির সুযোগ মেলে। আর চাঁদার বিনিময়ে ফুটপাত দখল হওয়াতে বাড়ছে বাজারের ক্রেতা, পথচারি ও এলাকাবাসীর ভোগান্তি। রাস্তায় বাজার স্থাপন ও রাস্তার ফুটপাত দখল হয়ে থাকার কারণে শিক্ষার্থী ও অফিস আদালতগামি যানচলাচল ও হাটাচলার দারুণ বিচ্যুতি ঘটছে।

এই পেক্ষাপটেই এলাকায় বাজার নয়, মুক্ত সড়ক চাই এমন দাবিতে সোমবার সকালে বনরূপা এলাকাবাসী ও ছদক ক্লাবের যৌথ ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য প্রদানের সময় ছদক ক্লাবের সহ-সভাপতি ডাঃ গঙ্গামানিক চাকমা ও বৃহত্তর বনরুপা সামাজিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রীতিময় চাকমা এসব অভিযোগ করেন।

তবে বাজার সমিতির পক্ষ থেকে চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করেন বনরূপা উত্তর বাজার সমিতির প্রতিষ্ঠা ও সভাপতি দীপক বিকাশ চাকমা ও ভাসমান কাঁচামাল একতা সমবায় সমিতির সভাপতি মিন্টু খীসা । তারা প্রতিবাদ করে বলেন, রশিদ ছাড়া যদি কেউ টাকা উত্তোলন করে তবে তখন তা অবশ্যই চাঁদাবাজি বলে গণ্য হয়। আমাদের বাজার সমিতি থেকে কখনো রশিদ ছাড়া টাকা উত্তোলন করা হয় না। সমিতি বিধি অনুযায়ী সুফলভোগীদের থেকে রশিদের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে থাকে।

সোমবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রনালয়ের কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বনরূপা বাজারে কৃষকের বাজার উদ্বোধন করার বিষয়টি জানাজানি হলে বনরূপা আবাসিক এলাকায় বাজার নয়, মুক্ত সড়ক চাই শ্লোগানে বনরূপা এলাকাবাসী ও ছদক ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ মানববন্ধন করা হয়। প্লেকার্ড,পেষ্টুন ও ব্যানার নিয়ে এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশুসহ কিছু সংখ্যকলোক মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানবন্ধন বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বনরুপা আবাসিক এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে ২০০৪ সালে বাজার স্থাপন করায় এলাকাবাসীদের ভোগান্তি পেতে হচ্ছে। বনরুপা বাজারের স্থাপনের বিরুদ্ধে ও নিরাপদভাবে চলাচালের জন্য দীর্ঘ দিন ধরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্বারকলিপি প্রদানসহ নানান অভিযোগ জানালেও তার কোন সুরাহা হয়নি।

এ সময় চাঁদাবাজির বিষয়ে ভাসমান কাঁচামাল একতা সমবায় সমিতির সভাপতি মিন্টু খীসা বলেন, সমিতিগুলোকে মিথ্যা বদনাম করে উল্টো তো ছদকক্লাব ব্যবসায়ীদের থেকে চাঁদা উত্তোলন করে থাকে। প্রতি শনিবার,মঙ্গলবার ও বুধবার বনরূপা বাজারে হাট বাজার বসে। ছদক ক্লাবের রাস্তার ওপার রাস্তার সামনে ভাসমান অবস্থায় যে শুটকি ব্যবসায়ী হাটবাজারের দিনে বসে ছদক ক্লাবের হয়ে তাদের থেকে চাঁদা উত্তোলন করেন মো. জাহাঙ্গীর নামে একজন। আমাদের সমিতির মাধ্যমে তারা চাঁদা উত্তোলন করতে চেয়েছিলো। আমরা তা প্রশ্চই দিইনি বলে তারা সমিতিগুলোর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।
ঘুরে দেখা যায়, বনরূপা চৌমুহনী থেকে শুরু করে সমতাঘাট পর্যন্ত ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছে ব্যবসায়ীরা।

ওয়ানব্যাংকের নিচে মোটরসাইকেল যত্রতত্র পার্কিং করে, আপেল-আঙ্কুর দোকানী ও মুরগী ব্যবসায়ী শুরু করে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। যা কোনো প্রশাসন, পৌর সভা থেকে শুরু করে বাজার সমিতিগুলো নিরব ভূমিকায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আরিফুল ইলসাম বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায়ই সময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হলেও দুই ঘন্টার পরে আবার ফুটপাত দখল করে বসে। এক্ষেত্রে বাজার সমিতি ও পৌরসভা যদি সব ব্যবসায়ীদেরকে ডেকে আলোচনায় বসেন তবে অবশ্যই ফুটপাত দখলমুক্ত হবে এবং যানচলাচলে সুফল আসবে।

পৌর প্যানেল মেয়র জামাল উদ্দিন বলেন, ছদক ক্লাব,বনরূপা উত্তর বাজার সমিতি ও বৃহত্তর বনরূপা সামাজিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো রাস্তাটি সংস্কার করা হলে পরে বনরূপা বাজারে ফুটপাত দখলমুক্ত থাকবে। বনরূপা বাজারে ফুটপাত দখল হয়ে যানচলাচল ও হাটাচলাচলে ভোগান্তি গুলো বাজার সমিতি ও এলাকাবাসী মিলে সমাধান করতে পারে।