বাইশারীর দুর্গম পাহাড়ে উন্নয়ন বোর্ড নির্মাণ করছে ১০ কিঃ মিঃ নতুন সড়ক

498

॥ নুরুল কবির বান্দরবান থেকে ॥
বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের চাক হেডম্যান পাড়া থেকে পিএইচপি রাবার বাগান হয়ে লংগদুর মুখ পর্যন্ত নতুন একটি সড়ক নির্মাণ করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। নির্মাণাধীন ব্রীক সলিন (ইটের রাস্তা) সড়কের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। কাজটি সম্পন্ন হলে পাল্টে যাবে পাহাড়ের চিত্র। এই সড়কটি নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটাবে, এমনটাই দাবী দূর্গম জনপদে বসবাসকারী মানুষের।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পরিচালিত ১০ কিলোমিটার রাস্তাটি ব্রীক সলিন দ্বারা উন্নয়নমূলক কাজটি পেয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মনি কনাস্ট্রাকশন। ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। কিন্তু করোনা আর আগাম বৃষ্টি কারনে কাজের মেয়াদ আরো দু বছর বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২০২২ সালে ডিসেম্বর মাসে অসম্পুন কাজটি সম্পুন করা হবে বলে জানিয়েছেন পাবত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। ইতিমধ্যে ৬কি:মি: কাজ সম্পন্ন হলেও আরো ৪ কিঃ মিঃ কাজ অসম্পন্ন রয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য থোয়াইচাহ্লা চাক।

স্থানীয় বাসিন্দা খিজারী চাক জানান, রাস্তাটি নির্মান হলে বাদুরঝিড়ি চাক পাড়ায় সন্ত্রাসীদের হুমকি ও অত্যাচারে উচ্চেদ হওয়া পরিবার গুলো সহজে আবারো ছেলে মেয়েদের নিয়ে বসবাস শুরু করতে পারবে। পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিতে পরবে অনেক সহজে। তাই পাড়াবাসী ও দ্রুত নির্মানাধীন কাজটি শেষ করার দাবী জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানানন কিছু কু-চক্রী মহল রাস্তাটির উন্নয়ন কাজে বাধা প্রদান করছে। এ নিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছি। যাহাতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখে এবং ঐ দুষ্ট চক্রের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বাইশারী চাকপাড়া হতে পিএইচপি রাবার বাগান হয়ে হয়ে লংগদুর মুখ পর্যন্ত সড়কটি নির্মানাধীন অবস্থায় রয়েছে। সড়কের কাজ শেষ হলে ভাগ্যের পরিবর্তন হবে হাজারো খেটে খাওয়া সাধারন মানুষের। পাহাড়ে বসবাসরত ৫টি গ্রামের লোকজনও একই ভাবে সুযোগ সুবিধার আওতায় আসবে। পাহাড়ে উৎপাদিত পন্য সহজে বাজার জাত করে ন্যায্য মুল্য পাবে চাষীরা। গাড়ী যোগে যাতায়ত সহ দ্রুত মালামাল নিয়ে এসে বাজারে বিক্র করতে পারবে এবং উৎপাদিত পন্য আর পচন ধরবে না।

রাস্তাটি নির্মান হলে রাবার বাগানের কয়েক’শ শ্রমিক সহজে যাতায়ত ও কাধে বহন করে রাবার আনা নেওয়া বন্ধ হবে। সরকার পাবে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী দোছড়ি ইউনিয়ন ও উপজেলার সাথে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হবে এবং আলী কদম উপজেলার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হবে বলে আওয়ামীলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাহাদুর জানান। তিনি আরো জানান, পার্বত্য মন্ত্রী মহোদয়ের আন্তরিকতায় শুধু বাইশারী লংগদুর মুখ সড়ক নয় পুরো উপজেলার চিত্রও পাল্টে গেছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক লিটন জানান, এক দিকে করোনা ভাইরাস ও অন্যদিকে আগাম বর্ষা হওয়ার কারনে কাজ একটু ধীর গতিতে চলছে। অবশ্যই শিডিউল মোতাবেক কাজ গুনগত মানেই সম্পন্ন করবে। এ বিষয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতা চান তিনি।

বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ আলম বলেন, জনগনের আস্থা ও ভালবাসা এবং পার্বত্যমন্ত্রী মহোদয়ের সু নজরে পাল্টে যাচ্ছে বাইশারী ইউনিয়নের চিত্র। তিনি আরো বলেন, বাইশারীতে শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে এবং বর্তমানে কয়েকশ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এসব পার্বত্য বীরের অবদান।

এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড (বান্দরবন) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু বিন ইয়াছির আরাফাত জানান, চাক হেডম্যান পাড়া থেকে পিএইচপি রাবার বাগান হয়ে লংগদুর মুখ পর্যন্ত নির্মাণাধীন ব্রীক সলিন এর ১০ কিলোমিটার রাস্তাটি কাজের গুনগত মান ঠিক রেখে সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ কাজ বুঝে নেওয়া হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হবে।