বাদাম চাষে প্রচুর সম্ভাবনা দেখে বাদামের প্রতি ঝুঁকছে জুরাছড়ির কৃষকেরা ॥ বাম্পার ফলন

452

॥ স্মৃতিবিন্দু চাকমা ॥
রাঙামাটির ক্ষেতগুলো এক সময় ছিল তামাকের দখলে কিন্তু তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে অবহিতে হয়ে বর্তমানে পাহাড়ি জমিগুলো ধীরে ধীরে নানা ধরণের সবজি ও  রবি শস্যে সবুজ হয়ে উঠছে। পার্বত্য এলাকার মাটি ও আবহাওয়া বাদাম চাষের জন্য উপযুক্ত বলে জানিয়ে আসছিলেন কৃষিবিদরা। এই সূত্র ধরে বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে জুরাছড়ির পাহাড়ি কৃষকেরা। এখন তারা সেই বাদাম চাষে প্রচুর সম্ভাবনা দেখছেন, আশা তরা হচ্ছে জুরাছড়িতে এবার বাদামের বাম্পার ফলন হবে।

জুরাছড়ি গেলে এখন খালে দুপাড়ে যতদুর চোখ যাবে চোখে পড়বে বাদামের সবুজ ক্ষেত। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুষ্মিতা চাকমা বলেন, জুরাছড়ি উপজেলার মোট ৯ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হচ্ছে, তার মধ্যে মৈদং ইউনিয়নে ৩ হেক্টর। গত বছর প্রতি হেক্টর থেকে ১.৮ মে.টন বাদাম উৎপাদন হয়েছিল। এবছর হেক্টর প্রতি ২মে.টন বাদাম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

একটি সময়ে ৩নং মৈদং ইউনিয়ন পরিচিত লাভ করেছিল তামাক চাষের জন্য। অধিকাংশ কৃষক তামাক চাষের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। তামাক চাষ করে কিছু কৃষক লাভবান হতে পারলেও অনেক কৃষকের লোকসান গুনতে হয়েছে। অনেক কৃষক বর্তমানে তামাক বাদ দিয়ে বাদাম, হলুদ চাষের ক্ষেত্রে ঝুঁকছেন। তবে একেবারে যে তামাক চাষ পরিহার হয়েছে তা নয় তবে বিগত সময়ের তুলনায় কিছুটা সীমিত আকারে চলে আসছে। আশা করা যাচ্ছে ধীরে ধীরে জুরাছড়ি উপজেলার কৃষকেরা তামাক চাষ  পরিহারের পথে রয়েছেন কৃষকেরা।

১৬ই ডিসেম্বর ২০২০ ফকিরাছড়ির উদ্দেশ্য যাওয়ার পথে এমনই মনোরম সবুজ বাদাম ক্ষেতের দৃশ্য চোখে পড়ে। কথা হয় কৃষক কালাচোগী চাকমা’র সাথে তিনি জানান, আমরা বিগত সময়ে তামাক চাষ করেছিলাম কিন্তু আমাদের একদিকে পরিবেশ অপরদিকে স্বাস্থ্যগতভাবেও ক্ষতি হয়েছে। শুধু তাই নয় প্রতি বছর লোকসান গুনতে হয়েছে, তাই এবার তামাকের পরিবর্তে  বাদাম চাষ করে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছি।

কৃষক সুজন বিকাশ চাকমা থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বছর বাদাম চাষ করে এক লক্ষ টাকার উপরে আয় হয়েছে। এবছর ফলন আরো বেশী ভালো হওয়াতে ২লক্ষ টাকার অধিক লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।

একই সুরে কৃষক শুভদীনি চাকমা বলেন, ঘরে বসে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি কেজি ১২০ টাকা হারে আমরা বাদাম বিক্রি করে থাকি। বাদাম চাষে তেমন প্ররিশ্রম নেই, বর্ষার পানিতে পলি জমাতে সারও তেমন প্রয়োগ করতে হয়না। কোন প্রকার রোগ বালাই বাদাম ক্ষেতে দেখা দিলে কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে থাকি।

মৈদং ইউনিয়নে দায়িত্বরত কৃষি উপ-সহকারি শুভক্ষণ খীসা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর অনেক কৃষক বাদাম,হলুদ সহ অন্যান্য রবি শস্য চাষে মনোনিবেশ করেছেন। খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে  কৃষকদের  পাশে থেকে সর্বদা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশাকরা যাচ্ছে এবছর বাদাম চাষ করে  কৃষকরা লাভবান হতে পারবে।