বিদ্যালয়হীন নন্দীছড়া গ্রামে দুই তরুণ-তরুণীর আলোকিত অভিযান

351

॥ স্মৃতিবিন্দু চাকমা ॥
‘আমাদের ছেলেমেয়েদের মানুষের মত মানুষ করতে চাই’ কথাটি বলেন নন্দীছড়া গ্রামের বাসিন্দা সুবর্ণা চাকমা। রাঙামাটি জেলার দূর্গম জুরাছড়ি উপজেলায় ১নং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে নন্দীছড়া গ্রামে ৭০ পরিবারের বসবাস। এরা সবাই জুমচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। নেই কোনো বিদ্যালয়, কিন্তু ছেলেমেয়েদে তো মানুষের মত মানুষ করতেই হবে। এই প্রত্যাশা থেকেই তরুণ তরুণীর আলোকিত উদ্যোগ।

কথা হয় নন্দীছড়া গ্রামের বাসিন্দা বারত্যা চাকমা’র সঙ্গে তিনি জানান, ২০১২ সালে বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক কর্তৃক একটি খন্ডখালিন প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। উক্ত প্রোগ্রাম ২০১৯ সাল পর্যন্ত চলমান থাকে। প্রোগাম শেষ হওয়াতে বর্তমানে এলাকার দুইজন তরুণ তরুণী সেচ্ছায় তাদের ছেলেমেয়েদের অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা জ্ঞানশ^র চাকমা জানান, নন্দীছড়া এবং গন্দীছড়া এলাকায় ৫০ জনের অধিক ছেলেমেয়ে রয়েছে। পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও আমাদের গ্রাম থেকে প্রত্যেক বিদ্যালয়ের দুরত্ব ৫ কিলোমিটার। তাই আমাদের ছেলেমেয়েদের মানুষ গড়ার জন্য অচিরেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে দাবী করেন।

ইউপি সদস্য কিরণ কুমার চাকমা থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই গ্রাম নিয়ে ৭০ পরিবারের অধিক এদের বসবাস। এই এলাকার অনেক ছেলেমেয়ে রয়েছে, এলাকাবাসীর ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করে এলাকার দুইজন তরুণ তরুণী নিজেরা সেচ্ছায় এগিয়ে এসে নন্দীছড়া,গন্ধীছড়া গ্রামের শিশুদের শিক্ষার আলো দিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো জানান,এলাকাবাসী দাবীর প্রেক্ষিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ বরাবর একটি দরখাস্ত করা হয়েছিল।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা জানান,নন্দিছড়া ও গন্দিছড়া এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য একটি দরখাস্ত পেয়েছি। নন্দীছড়া গ্রাম সহ কয়েকটি বিদ্যালয়হীন গ্রাম চিহিৃত করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)মাধ্যেমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী বিদ্যালয়হীন গ্রামে পিইডিপি ৪ প্রকল্পের আওতায় নতুন বিদ্যালয় পাওয়া গেলে উক্ত নন্দীছড়া গ্রামে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হরে এমনটাই বলেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কৌশিক চাকমা থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান,বিদ্যালয়হীন গ্রামে পিইডিপি ৪ প্রকল্পের আওতায় ১০০০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষে জুরাছড়ি উপজেলার চারটি বিদ্যালয়হীন গ্রামের তালিকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ে এলজিইডি মাধ্যেমে পাঠানো হয়েছে।