ভাড়া না দিয়েই যুগ যুগ ব্যবসা করছে রাঙামাটি পৌর সুপার মার্কেটের ভাড়াটিয়ারা

766

॥ ইকবাল হোসেন ॥
ভাড়া না দিয়েই বছরের পর বছর ব্যবসা করে যাচ্ছে রাঙামাটি পৌর মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। অনেকে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভাড়া না দিতে না দিতে ভুলেই গেছেন, তিনি দোকানের মালিক নাকি ভাড়াটিয়া। কেউ কেউ ভাড়া দেয় না ১৫ বছরেরও অধিক সময় ধরে।

অর্থ সঙ্কটে থাকা রাঙামাটি পৌরসভার এই একটি মার্কেটেই ভাড়া বাকি পড়ে রয়েছে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। পৌর কর্তৃপক্ষ অবশ্য বারবার ভাড়াটিয়াদের নোটিশ পাঠাচ্ছেন, তবে ওই পর্যন্তই; এর বেশি কোনো পদেেক্ষপ না থাকায় ভাড়াটিয়ারা বিষয়টা গা করছে না। এমন অভিযোগ করেছেন ভাড়াটিয়াদেরই কেউ কেউ।

তিন তলা বিশিষ্ট রাঙামাটি পৌরসভার আয় বর্ধনমূলক একমাত্র প্রকল্প এই পৌর মার্কেটে রয়েছে অন্ততঃ ৪৮টি দোকান। কোনো ভাড়াটিয়াই ঠিকমতো ভাড়া পরিশোধ করেন না। কয়েকজন দোকানদার কে ভাড়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই, তারা বলে উঠলো আরে ভাই পৌরসভার নিজেদের মানুষই তো বহু বছর ভাড়া দেয় না। তাদের অভিযোগের সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, সাবেক মেয়র প্রার্থী মো. রবিউল আলম রবির কাছে ভাড়া বাকি রয়েছে লক্ষাধিক টাকা।

বাজার পরিদর্শক জানালেন, রবি কমিশনার ১৫ বছর ভাড়া দেননি। তিনি পৌর সুপার মার্কেটের (৫৪ ও ৫৫ নাম্বার) ২টি দোকান ২০০৫ সালের ১ জুলাই বরাদ্দ নেন। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১ মাসের ভাড়াও প্রদান করেননি তিনি। পৌরসূত্র জানালো, তিনি মার্কেটের নীচের অংশে ফার্ণিচারের কারখানা বানিয়েছেন। এই অংশেরতো কোনো ভাড়াই তিনি প্রদান করেন না।

পৌরসভার বাজার পরিদর্শক কামাল উদ্দীনের দেওয়া তথ্য থেকে দেখা গেলো, একগাদা নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে ভাড়াটিয়াদের নামে। সেখানে আরো যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন- তপন পাল (দোকান নং-০৪), মাসুদ করিম (দোকান নং-১০), কামাল উদ্দীন (দোকান নং-১১-১৩), বিকাশ দাশ (দোকান নং-২১), হাসান মুরাদ (২৭, ২৮), ছাদেক হোসেন (দোকান নং-৩৩), বাদশা মিয়া (দোকান নং-৩৪), মো. শুক্কুর (দোকান নং-৩৫)। জানা গেলো, মনিকা আক্তার নামে একজন উদ্যোক্তা রেস্টুরেন্ট স্থাপনের জন্য এক বছর আগে পৌরভবন সংলগ্ন কিছু অংশ ভাড়া নেন। কিন্তু বছরখানেক সময় পার হয়ে গেলেও তিনি ১মাসের ভাড়াও প্রদান করেননি। এ তালিকায় এমন আরো অনেকের নাম রয়েছে।

পৌর সুপার মার্কেটের ভাড়ার বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌরসভার বাজার পরিদর্শক মো. কামাল উদ্দীন জানিয়েছেন- এই ভাড়াটিয়াদের বার বার নোটিশ দেওয়ার পরও তারা ভাড়া প্রদান করছেনা তাই আমাদের গত মাসিক সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, তারা কবে নাগাদ তারা ভাড়া প্রদান করবেন এবিষয়ে চুড়ান্তভাবে জানতে আমরা অতি শীগ্রই সকলকে নিয়ে বসব।

সাবেক কাউন্সিলর রবিউল আলমের সাথে ভাড়ার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভাই আমার কাছে তো খুব বেশি টাকা বাকি নেই। টাকাটা আমি অনেকদিন ধরেই পরিশোধ করবো করবো ভাবছিলাম। কিন্তু গত নির্বাচন ঘিরে মন খারাপ হওয়ায় অনেকদিন পৌরসভায় যাওয়া হয়নি। সহসাই সমুদয় ভাড়া পরিশোধ করে দিবেন বলে জানালেন তিনি।

এবিষয়ে রাঙামাটি পৌরসভার সচিব ইসলাম উদ্দীন জানান- ভাড়া প্রদানের জন্য আমরা বার বার তাদেরকে নোটিশ দিয়েছি এবং দিচ্ছি। তাদের এই অবহেলার কারণ আমার জানা নেই। তারপরও আমরা ভাড়া আদায়ের চেষ্টা করে যাচ্ছি।