মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার আবুল হোসেন আবু’র তিনটি কবিতা

310

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব
তারিখ: ১২-০৭-২০১২

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তুমি চেয়েছিলে শোষণহীন স্বদেশ
তাই তো আমরা পেলাম স্বাধীন বাংলাদেশ,
বঙ্গবন্ধু তুমি বলেছিলে পূর্ব-পাকিস্তানের ২৩ বছরের ইতিহাসের ধারা
শুধু শোষণ আর বঞ্চনার ইতিহাসে ভরা
ইহাই বাংলার মানুষের ভাগ্যের নির্মম পরিহাস।
বঙ্গবন্ধু তুমি ঐক্যবদ্ধ করেছিলে বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষেরে
তাই বাংলার দামাল ছেলেরা অস্ত্র হাতে নিয়েছিল পেতে স্বাধীন বাংলাদেশেরে,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তুমি চেয়েছিলে সকল মানুষের দু’বেলা দু’মুঠো ভাত
এটা নিশ্চিত করতেই গড়েছিলে বাকশাল,
যারা গণতন্ত্রের নামে বাকশালের বিরোধিতা করে মঞ্চ কাঁপায়
তারাইতো বুভুক্ষূ মানুষেরে কোনঠাসা করে শোষণ চালায়,
বঙ্গবন্ধু তোমাকে হত্যা করা হলো তথাকথিত গণতন্ত্রের জয়গানে
বাংলার মানুষ পড়ে গেল পুঁজিবাদের রোষানলে,
গণতন্ত্রের জিগিরে বাকশালকে বলা হলো স্বাধীনতা হরণকারী
অথচ গণতন্ত্রের বেড়াজালে সাধারণ মানুষ হয়ে গেল চির দুঃস্বপ্নধারী,
হায়! গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী কিছু মানুষের আয় বেড়ে গেল আকাশচুম্বী
এভাবেই ২২ হাজার পরিবার বনে গেল মাসলম্যান পুঁজিপতি,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তুমি দেখে যাও তাদের চলমান শিল্পনীতি।
সারাদেশে ১২ লক্ষ পরিবার আজ সহায় সম্বল হারানো গৃহহীন ভাসমান,
এটাতো নয় বঙ্গবন্ধু তোমার সোনার বাংলার মান।

পদ্মা সেতু
তারিখ: ১২-০৭-২০১২

বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘুমিয়ে আছে যে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে
কেমনে সহজে পার হবো বিশাল পদ্মা নদী যাব সে অঞ্চলে,
পদ্মা তুমি বলে দাও মোদের, যাতে পার হতে পারি সানন্দে
বাতলে দাও পার হবার পথ পদ্মা আমাদেরে মহা-আনন্দে,
পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ত্রিশ হাজার কোটি টাকা, যদিও নাই মোদের সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা
পনেরো কোটি মানুষ নিঃসন্দেহে তা করবে ব্যয়, নাই বা পেলাম দাতা,
বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরি দেশরতœ শেখ হাসিনা তোমার নেই কোন ভয়
এগিয়ে যাও, শুরু করো নির্মাণ না রেখে কোন সংশয়,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যেমন যুদ্ধ করে এনেছে বাংলার স্বাধীনতা
তুমি তাঁর যোগ্য কন্যা হিসেবে দেখিয়ে যাও মহানুভবতা,
বিশ্বব্যাংক তুমি কেন দূর্ণীতির খোঁড়া অজুহাতে বন্ধ করলে পদ্মা সেতু- ঋণ
এতে তো বাংলার মানুষের মাথায় বিদ্ধ হলো তোমার হাতের তীর,
একবারও কি ভাবলে না পনেরো কোটি মানুষের কথা
তোমার কি নেই বাংলার মানুষের জন্য কোন মহানুভবতা,
বিশ্বব্যাংক তুমি পুণর্বিবেচনা করো পদ্মা সেতুর  ঋণের চুক্তি
সকল বেড়াজাল পেরিয়ে যদি চুক্তি কর তাতেই হবে তোমার মুক্তি,
পনেরো কোটি মানুষ সমর্থন করো শেখ হাসিনার কথোপকথনের হেতু
যাতে তিনি অতি সহজেই নির্মাণ করতে পারেন পদ্মা সেতু,
শেখ হাসিনা তুমি এগিয়ে যাও অর্থ সংগ্রহের কাজে
দেশীয় অর্থেই নির্মাণ করা যাবে পদ্মা সেতু অতি সহজে।
 

“পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি”
তারিখ: ১২-০৭-২০১২

সংখ্যাগরিষ্ঠ মগ, হাজং, মারমা, মং, চাকমা ও সংখ্যালঘু বাঙালী
আজকের এই পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও রাঙামাটি অঞ্চলের কান্ডারী,
এক সময়ের স্বতন্ত্র রাজ্য আরাকানের ছিল মহাসমারোহের আবাসন
বৃটিশ শাসনামলে আরাকানে এলো কিঞ্চিত বাংলার শাসন,
বৃটিশরা ছাড়লো অবিভক্ত ভারত, বাংলার আরাকান হলো পূর্ব পাকি¯তানের আসাদন।
১৯৭১ এ পূর্ব পাকি¯তানকে স্বাধীন করার জন্য শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ,
এতে পূর্ব পাকি¯তান হলো স্বাধীন বাংলাদেশ, পাকি¯তান হলো ক্ষুব্ধ
আমরা তাই পেলাম স্বাধীন বাংলাদেশ তৎকালীন আরাকান সুদ্ধ।
আদিবাসী মগ, হাজং, মারমা, মং ও চাকমারা ধরে রাখতে তাদের কৃষ্টি
ঝাঁপিয়ে পড়লো সশস্ত্র যুদ্ধে তিন দশকেরও অধিক সময়ের সৃষ্টি,
বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নামায় সেনাবাহিনী
এতে বেপরোয়া হয়ে উঠলো মগ, হাজং, মারমা, মং ও চাকমার সশস্ত্রবাহিনী।
জোতিন্দ্রিয় বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)-র নেতৃত্বে ঝাঁপিয়ে পড়লো জনসংহতি সমিতির ‘ শান্তিবাহিনী’,
এটাই তিন দশকের এ যুদ্ধে প্রাণ হারানো ত্রিশ হাজার নিরীহ বাঙালী, পাহাড়ী জনসাধারণ এবং
সেনা ও জনসংহতি সদস্যের কাহিনী।

তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন সংকটাপন্ন পরিবেশের উত্তরণে
ইস্পাত কঠিন ব্রত নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গেলেন রাজনৈতিক শান্তির সমীকরণে,
দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর চললো শান্তির আলোচনা
পরিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ পাহাড়ী জনসাধারণকে স্বায়ত্তশাসন দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে উঠলো শান্তির সমালোচনা,
সকল বাঁধা বিপত্তি পরিহার করে, ১৯৯৭ এ স্বাক্ষরিত হলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি।
এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন দেয়ায় বিশ্বে উজ্জল হলো বাংলাদেশের শান্তির ভাবমূর্তি,
অবশেষে এতে ঘটলো বহুল আলোচিত দীর্ঘ ত্রিশ বছরের সশস্ত্র যুদ্ধের পরিসমাপ্তি
যেমনটি হয়েছিল, ১৯৭৮ এ ইসরাইল ও মিশরের ‘ক্যাম্প ডেভিড’ চুক্তি,
১৯৯৩ এ ইসরাইল ও পিএলও-র ‘ফিলিস্তিন-ইসরাইল স্বায়ত্বশাসন চুক্তি।

 পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।