স্টাফ রিপোর্টার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : রাঙামাটিতে ওয়ার্ড ছাত্রদলের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আয়োজিত সম্মেলন পুলিশের লাঠি পেটায় পন্ড হয়ে যায় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। রোববার সন্ধ্যায় শহরের দুই নং ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের লাঠিপেটায় অন্তত ১০ জন কমবেশি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে গ্রেফতার এড়াতে আহতরা নিজেদের মতো করে ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
রোববার পূর্ব ঘোষিত সময়নুসারে শহরের রিজার্ভ বাজারস্থ শহীদ শুক্কুর স্টেডিয়ামের উম্মুক্ত মঞ্চে দুই নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের কমিটি গঠনকল্পে ওয়ার্ড সম্মেলনের আয়োজন করে ছাত্রদলের নগর শাখা। এর আগে এই সম্মেলন উক্ত জায়গায় না করে নিজ কার্যালয়ে করার জন্য কোতয়ালী থানার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ছাত্রদলের জেলা সভাপতি আবু সাদৎ মোঃ সায়েমকে। থানা থেকে তাকে জানানো হয় এখানে সম্মেলন হলে মারামারি হবে, এমন তথ্য আমাদের হাতে রয়েছে। তাই এখানে না করে ছাত্রদলের দলীয় কার্যালয়ে সম্মেলন করা হোক। কিন্তু জেলা ছাত্রদলের দায়িত্বশীল একজন সিনিয়র নেতা থানা কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের উপর দায় নিয়ে কোনো প্রকার ঝামেলা হবে না মর্মে কথা দিয়ে শহীদ শুক্কুর মাঠেই সম্মেলনের আয়োজন করেন। রোববার বিকেলে আয়োজিত এই ওয়ার্ড সম্মেলনের প্রথম পর্ব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ঝামেলা বাধে দ্বিতীয় পর্বে। এসময় জেলা ও শহরের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কে পরবর্তীতে কমিটি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে অনুষ্ঠান তড়িগড়ি করে শেষ করার চেষ্ঠা চালানো হয়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষমান থাকা তৃণমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের অন্যান্য জেলার মতো এবং রাঙামাটি শহরের অন্য ওয়ার্ডের মতো অফিস থেকে কমিটি ঘোষিত হলে পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা নেতৃত্বে আসতে পারে না।
তাই পরীক্ষিত নেতাকর্মীদেরকে বিশেষ করে বিগতদিনে যারা আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলো এবং যারা সরকারদলীয়দের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আজকের দিন পর্যন্ত শহীদ জিয়ার আদর্শে উজ্জেবিত রয়েছে, তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে নেতৃত্ব প্রদান করা হোক। এসময় নেতাকর্মীরা প্রয়োজনে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাইয়ের অনুরোধ জানিয়ে জেলার নেতৃবৃন্দকে কোণঠাসা করে রাখে। পরে বাধ্য হয়ে তৃণমুল পর্যায়ের নেতাদের চাপে ভোটাধিকার প্রয়োগের সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেন উপস্থিত সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। কিন্তু এরই মধ্যে বিবদমান দুইটি পক্ষ হট্টগোলে লিপ্ত হয়। পরে খবর পেয়ে কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রশিদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে এলোপাতারি লাঠি-পেটা করতে থাকেন। এসময় পুলিশের পেদানীতে মূহুর্তের মধ্যেই ওয়ার্ড সম্মেলনটি পন্ড হয়ে যায়। দ্বিগি¦দিক ছুটোছুটি করে ছাত্রদলের নেতারা পালিয়ে যান।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা ছাত্রদলের দায়িত্বশীল একজন নেতা জানিয়েছেন, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম, আমি নিজেই প্রত্যক্ষ করেছি যে, সম্মেলনে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের অনেক কর্মী এমনকি কয়েজন নেতাও উপস্থিত ছিল। তারা একটি পক্ষের হয়ে বিভিন্ন উত্তেজনামূলক শ্লোগানও দিয়েছে। আর তাদের কারনেই সামান্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল।
পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান