রাঙামাটিতে মাদক বিরোধি অভিযানের নামে বাড়িতে হামলার অভিযোগ

429

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারের মহসিন কলোনী এলাকায় মাদক দ্রব্য উদ্ধার অভিযানের নামে বসতঘরে হামলা করে জিনিসপত্র ভাংচুরের পাশাপাশি নগদ প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকাসহ স্বর্ণালংকার নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাঙামাটি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনের বিরুদ্ধে।

অভিযানের সময় বাসার নারীদের সাথে অশালীন আচরণ করার অভিযোগও তুলেছে ভূক্তভোগী নারীরা। বিষয়টি উল্লেখ করে কোতয়ালী থানা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে হয়রানীর শিকার নারী রুবী আক্তার ময়না। কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ কবীর হোসেন অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
রুবি আক্তার অভিযোগ করেন, রাঙামাটি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক (ওসি) শিবনাথ, এএসআই লিটন ও কনস্টেবল সালাউদ্দিন এই তিনজনে মিলে সোমবার সকাল সাড়ে দশটার সময় তাদের বাবার বাসার ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করে। এসময় তারা নিজেদেরকে পুলিশ পরিচয় দেয়। পরবর্তীতে ঘরের নারীদের সাথে অশালীন কথাবার্তা বলে এবং নানা ধরনের হুমকি দিতে থাকে।

এসময় রুবীর মা সহ অন্যান্য নারীদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে আলমিরা ভেঙ্গে ৮২ হাজার ৫শ টাকা এক ভরি ৬ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন, একটি বিভো ওয়াই-৯ মোবাইল ফোনসেট, খাটের নীচ থেকে ১৪৫০ টাকা, ভাই রফিকের বাসা থেকে ৪০ হাজার টাকা, অপর ভাই টিপুর রুমের ড্রয়ার থেকে ৬ হাজার টাকা, এবং রুবীর নিজ রুমের আলমিরার ড্রয়ারে ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস বইয়ের ভেতর থেকে ১২হাজার ৫শ টাকা নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেয়।

এসবগুলো সর্বমোট আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ লাখ ৪২ হাজার ৯৫০ টাকা। অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, ঘরে এই ধরনের হামলা ভাংচুর চালিয়ে বাহির থেকে একজনকে ধরে এনে উক্ত ঘরে ৬ হাজার টাকাসহ ইয়াবা পাওয়া গেছে মর্মে সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এই ধরনের হামলা ও লুটের ঘটনার বিচার চেয়ে কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রুবী আক্তার।

এদিকে সোমবার সকালে উক্ত অভিযানের নেতৃত্বে থাকা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ওসি শিবনাথ কুমার সাহা’র এর মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় অভিযানে অংশ নেওয়া মাদক অফিসের এএসআই লিটন কুমার নন্দী অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিককে জানিয়েছেন, আমরা নিয়ম মেনেই অভিযান পরিচালনা করে ঘটনাস্থল থেকে ১৮৫ পিছ ইয়াবা উদ্ধার করেছি। এই বিষয়ে কোতয়ালী থানা মামলা দায়ের করেছি।

এদিকে মাদক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে সাংবাদিকের কাছে জানিয়েছেন, তাদের এক কনস্টেবল তাকে ভাংচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাঙামাটি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, বসত ঘরে হামলা বা ভাংচুরের বিষয়টি নিয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে আমি সংশ্লিষ্ট্যদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।