রাঙামাটি শহরে শ্বশুর-দেবরের নির্যাতন থেকে বাঁচতে গৃহবধুর আঁকুতি

427

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
সম্পদের লোভ ও সম্পদ লুটে নিতে শ্বশুড় ও সৎ দেবরের প্রতারণার শিকার নুর বেগম। এ ব্যাপারে শনিবার সকালে রাঙামাটি প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। শ্বশুড়সহ পরিবারের সকলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন নির্যাতিত ও সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত বিধবা নারী নুর বেগম।সংবাদ সম্মেলনে নুর বেগম তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, শ্বশুর, সৎ শ্বাশুরি,সৎ ননদ ও সৎ দেবরের অত্যাচারে সত্যি সংবাদ সম্মেলন করতে আমাকে বাধ্য করেছেন তারা।

শহরের রিজার্ভ বাজার চেঙ্গিমুখ এলাকার বাসিন্দা আমার শ্বশুড় আবদুল হালিমগং তার পরিবার আমার মৃত স্বামীর সম্পদ লুটপাট করার জন্য বিভিন্ন ভাবে আমি ও আমার এক নাবালক মেয়েসহ তিন মেয়েকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি নির্যাতন করে আসছে। একের পর এক মিথ্যা দিয়ে আমার মৃত স্বামীর সম্পদ আত্বসাধের চেষ্টা যাচ্ছে আমার শ্বশুরগং।

উপস্থিত সংবাদ সম্মেলনে আমি মোছাম্মৎ নুর বেগম,স্বামী মৃত হযরত আলী নিক্সন,সাং-চেঙ্গিমুখ, রির্জাভ বাজার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা। আমি একজন ধর্মপ্রাণ ও পর্দানশীল গৃহবধূ হই। আমার শ্বশুড়,সৎশ্বাশুড়ি,সৎদেবর ও সৎননদ কর্তৃক মহামান্য আদালতের আদেশ অমান্য করে প্রতারণামূলক ভাবে সম্পদ থেকে আমাকে বঞ্চিত করার অপচেষ্টারসহ হামলা মামলা এবং শাররীক ও মানসিক নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে একজন নির্যাতিত নারী হিসেবে আপনাদের লিখনির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে নুর বেগম অভিযোগ করে বলেন,করোনাকালে আপনাদের সদয় উপস্থিতির জন্য সত্যি আমি কৃতঞ্জ। আপনারা অবগত আছেন যে, গত ৫জুন ২০২০ আমার শ্বশুর আবদুল হালিম আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়ে মিথ্যা বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগ উত্থাপনের মাধ্যমে আমার হেয় প্রতিপন্ন করার প্রসায় চালিয়েছে।

কিন্তু ২০০১ সালে আমার স্বামী হঠাৎ জানতে পারেন যে,আমার শ্বশুড় গোপনে তার সম্পদের বেশ কিছু অংশ প্রথম পক্ষের ৩সন্তানকে বঞ্চিত করে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও সে ঘরের ২ সন্তানকে বাজার ফান্ড মিউট মামলা ১৮/ ২০০১-২০০২ মূলে দানপত্র করার আবেদন করেছেন। তখন আমার স্বামী ও তার ২ বোন তৎকালিন জেলা প্রশাসক আদালতের শরণাপ্নœ হয়ে সিভিস স্যুট মামলা ১২৩/২০০১ দায়ের করেন। মাননীয় আদালত আমার শ্বশুড়ের দানপত্র করার আবেদনটি(মিউট মামলা ১৮/২০০১-২০০২) বাতিল ঘোষনা করেন (রায়ের কপি সংযুক্ত)।

বর্তমানে অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আমার শ্বশুর উক্ত সম্পাদিত আপোষনামা ভঙ্গ করে ও মহামান্য আদালতের রায় অমান্য করে গোপনে ২০১৬ সালে ৩৫/২০১৬ মিউট মামলা মূলে প্রথম স্ত্রীর পিতা হতে প্রাপ্ত দোকানটি দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে অন্যায় ভাবে দানপত্র করে দেন (সংযুক্ত)। এর পর দ্বিতীয় দফায় ২০১৮ সালে আমার শ্বশুড়ের নামীয় অবশিষ্ট সম্পদের প্রায় অর্ধেক অংশ বাজার ফান্ড মিউটেশন মামলা নং-১৩২/২০১৮ ইং মূলে আমার সৎশ্বাশুড়ি ও তার গর্ভের ২ সন্তানকে দানপত্র করে দেনতিনি মূলতঃ ধর্মীয় লেবাছে একজন ঠক.মিথ্যাবাদী ও অসামাজিক ব্যক্তি হিসেবেই এলাকা ও আত্বীয়স্বজনের কাছে পরিচিত। আমার শ্বশুড়ের দুই সাংসার। প্রথম পক্ষের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে আমার শ্বশুরি সায়েরা বেগম ১৯৯১সালে মৃত্যু বরণ করিলে আমার শ্বশুড় সংসারের দেখভাল করার জন্য তার প্রথম পুত্র হযরত আলী নিক্সনকে মাত্র ২১ বছর বয়সে বিয়ে করিয়ে আমাকে পুত্রবধূ হিসেবে ঘরে আসেন।

কিন্তু ২০০১ সালে আমার স্বামী হঠাৎ জানতে পারেন যে,আমার শ্বশুড় গোপনে তার সম্পদের বেশ কিছু অংশ প্রথম পক্ষের ৩সন্তানকে বঞ্চিত করে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও সে ঘরের ২ সন্তানকে বাজার ফান্ড মিউট মামলা ১৮/ ২০০১-২০০২ মূলে দানপত্র করার আবেদন করেছেন। তখন আমার স্বামী ও তার ২ বোন তৎকালিন জেলা প্রশাসক আদালতের শরণাপ্ন হয়ে সিভিস স্যুট মামলা ১২৩/২০০১ দায়ের করেন। আমার শ্বশুড়ের দানপত্র করার আবেদনটি(মিউট মামলা ১৮/২০০১-২০০২) বাতিল ঘোষনা করেন (রায়ের কপি সংযুক্ত)। বর্তমানে অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আমার শ্বশুড় উক্ত সম্পাদিত আপোষনামা ভঙ্গ করে ও মহামান্য আদালতের রায় অমান্য করে গোপনে ২০১৬ সালে ৩৫/২০১৬ মিউট মামলা মূলে প্রথম স্ত্রীর পিতা হতে প্রাপ্ত দোকানটি দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে অন্যায় ভাবে দানপত্র করে দেন (সংযুক্ত)। এর পর দ্বিতীয় দফায় ২০১৮ সালে আমার শ্বশুড়ের নামীয় অবশিষ্ট সম্পদের প্রায় অর্ধেক অংশ বাজার ফান্ড মিউটেশন মামলা নং-১৩২/২০১৮ ইং মূলে আমার সৎশ্বাশুড়ির ও তার গর্ভের ২ সন্তানকে দানপত্র করে দেন।অল্প বয়স হওয়ায় আমার স্বামী (হযরত আলী নিক্সন) তখনো উপার্জন শুরু করেনি।

আমার শ্বশুড়ের নিজস্ব ৮(আটটি) দোকান ও আমার শ্বাশুড়ির পিতা থেকে পাওয়া একটি (দোকানসহ) মোট ৯টি (নয়টি দোকান ও কিছু ঘর ভাড়া ছিল। মামলা নং- ০৪/২০২০। আমরা গত ২৪-৩-২০২০ ইং তারিখে পৌর মেয়রসহ স্থানীয গন্যমান্য ব্যক্তিকে তাদের প্রতারণার বিষয়ে অবহিত করায় আমার সৎ দেবর আমাকে ও আমার স্বামীকে এমন কি আমার স্বামীর মৃত মাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ আমাদের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গেল ৪জুন ২০২০ইং তারিখ আমার শ্বশুড় বাড়ি এলাকায় উপস্থিত হয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিরোধ মিমাংসার চেষ্টা করলে আমার সৎদেবর আবদুল্লাহ আল হামদানসহ তার পোষ্য সহযোগিরা স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের উপর হামলে পরে। বর্তমানে আমি আমার একটি ছোট মেয়েসহ আর্থিক, মানসিক ও জীবনের চরম অনির্শ্চয়তায় ভুগছি। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা, অধিকার ও সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মৃত হযরত আলী নিক্সনের মেজো বোন সায়দা নুর পাপড়ি, হযরত আলী নিক্সনের চাচাতো বোন নুর আয়েশা,নিক্সনের মেয়ে আজিজাসহ নিক্সনের অসংখ্য আত্বীয়স্বজন। সবার একই বক্তব্য প্রবাসে মৃত হযরত আলী নিক্সনের স্ত্রীকে তার বাবা আবদুল হালিমগং সম্পদ না দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও নির্যাতন করে আসছে।