রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাথে তরুণদের জাতীয় যুব-নীতি সংলাপ অনুষ্ঠিত

2

|| ইকবাল হোসেন ||

ইয়ুথ এনগেজমেন্ট ফর সাস্টেনিবিলিটি (ইয়েস) বাংলাদেশের আয়োজনে রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে অনুষ্ঠিত হলো ন্যাশনাল ইয়ুথ পলিসি ডায়ালগ । যেখানে দেশের ৮ টি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেন এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী নির্বাচনে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যুবদের উত্থাপিত বিষয়গুলো সম্পৃক্ত করার জন্য আহবান জানানো হয়।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী আয়োজিত সংলাপে দেশের বিভিন্ন জেলার শতাধিক যুব ও যুব নারীরা অংশ নেন এবং তারা বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে প্রস্তাবনা দেন এবং সেগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

ইয়েস বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক শাফায়েত জামিল নওশানের পরিচালনায় সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি প্রশ্ন করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত যুব সদস্যরা। এসময় তারা নারীদের নিরাপত্তা, নারী নেতৃত্ব বাড়ানো,যুবকদের কর্মসংস্থান, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা, জলবায়ু পরিবর্তনে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর করণীয়, ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ছাত্র রাজনীতি ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে রাজনৈতিক দলের ভাবনা, নদী দখল মুক্তকরণ, কৃষিখাতে উন্নয়ন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি এনং নদীর বাঁধ ভাঙন রোধে স্থায়ী করণীয় রাজনৈতিক দলগুলো নিবে কিনা এসব বিষয়ে প্রশ্ন করেন যুবরা। পরবর্তীতে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তরূণদের পরামর্শগুলো যুক্ত করার আশ্বাস দেন।

ইয়েস বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা হক নিশি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ,এনডিএম মহাসচিব মমিনুল আমিন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম মাসুদ, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রচার ও দাওয়া সম্পাদক শেখ ফজলুল করিম মারুফ, আপ বাংলাদেশের প্রধান সংগঠক নাঈম আহম্মেদ এবং আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক।

শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যুবকদের অংশগ্রহণে সরকারের বাইরে একটি বড় শক্তি হিসেবে বাসযোগ্য রাষ্ট্র বিনির্মান করতে সহযোগী হবে। ইতোমধ্যে জামায়াত ইসলাম দশ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। জলবায়ু ভারসাম্য রক্ষায় তরুণদের নিয়ে আমরা কাজ করছি। আগামীদিনের বাংলাদেশ সবাইকে সাথে নিয়ে গড়ে তুলবে।

নাঈম আহম্মেদ বলেন,রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ রাজনীতিতে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও নারীর ক্ষমতায়ন বাড়ানোর জন্য দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।

আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ইশতাহারে আইনের শাসন নিয়ে বেশকিছু প্রস্তাবনা থাকবে। বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর বলে জানান তিনি। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে ও নারী নেতৃত্বের বিকাশের জন্য বিএনপি কাজ করবে বলে জানান তিনি

জোনায়েদ সাকি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এ যুগে যুবকদের আরও বেশি করে কাজে লাগানো হবে। যুবকদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে দলগতভাবে কাজ করা হবে। পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য গণসংহতি আন্দোলন কাজ করবে বলে জানান তিনি।

শেখ ফজলুল করিম মারুফ বলেন, ইসলামি আন্দোলন নারী নেতৃত্ব সৃষ্টি করার জন্য নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কাজ করছে। দেশের সংস্কারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সংস্কার করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সকলে মিলে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

মমিনুল আমিন বলেন,মানবাধিকার ও নাগরিক ক্ষেত্র বিকশিত কর‍তে আমরা কাজ করছি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে দেশকে ডিজিটাল রুপান্তর করে যুব শক্তিকে কাজে লাগানোর আশ্বাস দেন তিনি।

ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির পাশাপাশি এবি পার্টি নতুন রাজনীতির বন্দোবস্ত করে কাজ করছেন।তরুণদের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে নারী নেতৃত্ব সৃষ্টির পাশাপাশি যুবকদের মানসিক সুস্থতা এবং জলবায়ু বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং রাজনৈতিক ইশতেহারে এসকল বিষয় যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

পরিশেষে, ইয়েস বাংলাদেশের সহ সভাপতি ইফফাত আরা জাহান বলেন, আগামীর বাংলাদেশ তরূণরা যেমন দেখতে চায় সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শ করার লক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়েছে। এ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তরুণদের ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের পরামর্শকে গুরুত্ব দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, যা বাংলাদেশের শিশু ও যুব অধিকার বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।