শান্তিচুক্তির ফলে পার্বত্য অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, শান্তি ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে: বীর বাহাদুর উশৈসিং

376

স্টাফরিপোর্ট- ২ ডিসেম্বর ২০১৮, দৈনিক রাঙামাটি:

আজ রোববার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেছেন, বর্তমানে পার্বত্য অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, শান্তি ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বীর বাহাদুর বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পার্বত্যবাসীর কল্যাণে সর্বপ্রথম অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ এর নির্মম হত্যাকান্ডের পর সেই উদ্যোগ কার্যকর হতে অনেক সময় লেগে যায়।

তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নের ধারা বজায় থাকার জন্য বর্তমান সরকারকে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে। শান্তিচুক্তির সময় একটি পক্ষ বাধা প্রধান করেছিল। তারা বলেছিল এই চুক্তি হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে নাকি পাসপোর্ট নিয়ে ঢুকতে হবে, সরকার ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে। এসব ভূল প্রচারণ চালিয়ে কালো পতাকা মিছিলও করেছে। তাদের এসব কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই চুক্তি করা সম্ভব হয়েছে। আস্থা থাকলে যেকোনো অশান্ত পরিবেশ শান্ত করা সম্ভব। তিনি তা প্রমাণ করেছেন। পাবর্ত্য চট্টগ্রাম এখন শান্তির যায়গা। বীর বাহাদুর উশেসিং আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে জানানোর কথা থাকলেও তা করা হয় না। তাই এই অঞ্চলের অধিকতর উন্নয়নের জন্য, যেকোনো কাজ নিজস্ব পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা জরুরি।

পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল এই এলাকার মানুষ কখনো দেখেনি। চুক্তির মাধ্যমে এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। প্রতিটি উপজেলায় কলেজ, হাসপতাল হয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছে শান্তিচুক্তির শান্তি পৌঁছে দেওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব। নিজেদের মধ্যে বিভক্তি থাকলে সামনে আগানো যাবে না। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন হতে থাকবে, সেই সাথে নিজেদেরও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। চুক্তির দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না।

পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ইতোমধ্যে ৪৮টি সম্পূর্ণ, ১৫টি আংশিক এবং ৯টি ধারার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় চলমান রয়েছে। চুক্তির আওতায় এখ নপর্যন্ত ৫৫২ টি ক্যাম্পের মধ্যে ২৩৮টি ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নূরুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রথমসচিব কাজী গোলাম রহমান বক্তব্য রাখেন।

আলোচনাসভায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসী ও বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।