গৃহবধূর শ্লীলতা হানির চেষ্টাকালে ধস্তাধস্তিতে তিন মাসের অন্তসত্ত্বা নারীর ভ্রুণ অপরিণত এবরসন হওয়ার অভিযোগে এক সরকারি কর্মচারীকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে রাঙামাটির আদালত।
রাঙামাটি জেলার অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিজ্ঞ সাবরিনা আলীর আদালত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। গৃহবধূর দায়ের করা জিআর মামলা-৬৫/১৯ এর প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষের শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত অভিযুক্ত তোফাজ্জল হোসেনকে জেল হাজাতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
তোফাজ্জল চট্টগ্রাম জেলাপ্রশসক কার্যালয়ে বোটম্যান হিসেবে কর্মরত এবং তার বাড়ি রাঙামাটি শহরের ওমদামিয়া হিল এলাকায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তোফাজ্জল দীর্ঘদিন যাবত তার প্রতিবেশী আফরোজা বেগম ও জাফরুল হাসানের সাথে নানাভাবে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত ছিলেন।
অবশেষে গত ৩ মার্চ আফরোজার স্বামী বাসায় না থাকার সুযোগে তোফাজ্জল প্রতিবেশী আফরোজার বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে তার শ্লীলতা হানির চেষ্টা চালায়। এ সময় ধস্তাধস্তি ও তোফাজ্জলের আঘতে তিন মাসের অন্তসত্ত্বা আফরোজা বেগমের এ্যবরসন হয়ে যায়। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল এবং রাঙামাটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ডাক্তারী রিপোর্টে এই এ্যাবরসনের স্বপক্ষে সনদ প্রদান করা হয়।
আফরোজার স্বামী জাফরুল হাসান জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তোফাজ্জল গেট ফেঙ্গে বাসায় প্রবেশের পর তার স্ত্রীকে জাপটে ধরলে তার চিৎকারে আমার মেয়ে এগিয়ে এলে তাকেও তোফাজ্জল মারধর করে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের চেচামেচিতে তোফাজ্জলের স্ত্রী এবং কন্যা এসে তোফাজ্জলের সাথে যুক্ত হয়ে তার স্ত্রী সন্তানকে ব্যাপক মারধর করে এবং বাসার বিভিন্ন দামি জিনিস ও কন্যার গলার চেন হাতিয়ে নেয়।
এ সময় শোরগোলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা অচেতন অবস্থায় তার স্ত্রীকে এবং আহত কন্যাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
খবর পেয়ে তিনি হাসাপাতালে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী সন্তানের আগেই তোফাজ্জল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। রাঙামাটি হাসপাতালের রেজিস্টার অনুযায়ী ৩ মার্চ তোফাজ্জলের ভর্তির ক্রমিক ২৫৩। অথচ তোফাজ্জল এখন প্রচার করার চেষ্টা করছে সে ঘটনার দিন রাঙামাটিতে ছিল না।
জাফরুল জানান, ‘আমার স্ত্রীর জীবন সঙ্কটাপন্ন’, স্ত্রী কন্যা আঘাতপ্রাপ্ত হলেও তাদের অনাগত সন্তান অকালে ঝরে যাওয়ায় তারা মনের কষ্টে আদালতের স্মরণাপন্ন হতে বাধ্য হয়েছেন।
বাদী আফেরোজার দায়ের করা -৬৫/১৯ জিআর মামলার প্রাথমিক তথ্যে দন্ডবিধির ১৪৩, ৪৪৮, ৩২৩, ৩১৫, ৩৭৯ এবং ৫০৬ ধারা উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
তোফাজ্জল কয়েকদিন পলাতক থাকার পর বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন জানালে বিজ্ঞ আদালত শুনানীশেষে তাকে জেল হাজাতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।