ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন অংসুচাইন চৌধুরীর

310

॥ কাপ্তাই প্রতিনিধি ॥
কাপ্তাই উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়্যারম্যান অসংইছাইন চৌধুরী বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় কাপ্তাই প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযোগ করেন, তাঁর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু মহল ভূঁয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের কাছে উড়ো চিঠি পাঠান। যাতে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করা হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে তিনি বুধবার এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ৩১ আগস্ট ৪নং কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়্যারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফের মাধ্যমে জানতে পারেন যে তাঁর কাছে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে একটি চিঠি আসে। চিঠিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে ৫ জনের স্বাক্ষর যুক্ত অভিযোগ প্রেরণ করা হয়। চিঠিতে অভিযোগকারীদের নাম গুলো হলো সুইনুচিং মারমা, মনোয়ারা বেগম, মোঃ হানিফ বাবুল, পরিমল কান্তি তনচংগা এবং অজয় সেন। তাঁরা সকলেই কাপ্তাই আওয়ামীলীগ এবং তাঁর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের সাথে জড়িত।

এই চিঠির অনুলিপি প্রেরণ করা হয় পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, রাঙামাটি জেলার আওয়ামীলীগের সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা হতে নির্বাচিত সাংসদ দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে। তিনি এই চিঠি পাঠ করে জানতে পারেন যে, তাঁর প্রাণপ্রিয় কিছু সহযোদ্ধার নাম ব্যবহার ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তাঁর সম্মানহানি এবং রাজনৈতিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য আ’লীগ এবং গোয়েন্দা সংস্থার কাছে মিথ্যা ও বানোয়াট কিছু অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি এই মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অংসুইছাইন চৌধুরী জানান, তিনি দুই দুইবার জেলা পরিষদের সদস্য এবং কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্ব পালনে তিনি কখনও অন্যায় এবং দূর্নীতিকে প্রশ্রয় দেননি। তিনি আরও জানান, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর ব্যাংক লোনের মাধ্যমে শীলছড়িতে জায়গা ক্রয় করা হয়েছে। অথচ এই কুচক্রি মহল ভূঁয়া অভিযোগ করেছেন তিনি নাকি জোর করে এই জায়গা দখল করেছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বিএনপি কিংবা প্রতিপক্ষ কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাথে তাঁর কোন সখ্যতা নেই। তিনি জানান, উড়োচিঠির সাথে সংযুক্ত বিএনপি নেতা ডা. রহমতউল্লার নাম প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ ছবিতে যেই ছবিটি সংযুক্ত করা হয়েছে তিনি কাপ্তাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মো. ইস্রাফিল হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ডেপুটি কমান্ডার ইস্রাফিল হোসেন জানান, উড়ো চিঠিতে উপজেলা আ.লীগ সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরীর সাথে তাঁর ছবি সংযুক্ত আছে অথচ তাঁর পিতাকে রাজাকার বলা হয়েছে। আমি একজন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জেএসএসের সাবেক যুগ্ন সম্পাদক ও ইউপি সদস্য সুইপ্রু মারমা জানান, তাঁকে জেএসএসের গোয়েন্দা শাখার প্রধান বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে এবং তাঁর সাথে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির সখ্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সুইপ্রু মারমা জানান, তিনি ২০১৯ সালে জেএসএস হতে পদত্যাগ করেন এবং জেএসএস এর সাথে বর্তমানে তার সর্ম্পক নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অংসুইছাইন চৌধুরী জানান, দূর্নীতির অভিযোগে বহিষ্কৃত আওয়ামীলীগ হতে কিছু নেতাকর্মী তাঁর বিরুদ্ধে এই ভূঁয়া, মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ করতে পারেন। তিনি আরও জানান, রাঙামাটির অবিসংবাদিত নেতা পাহাড়ী বাঙালীর ঐক্যের প্রতীক রাঙামাটি হতে বার বার নির্বাচিত সাংসদ দীপংকর তালুকদারের নেতৃত্বে আমরা কাপ্তাই আওয়ামীলীগ পরিবার ঐক্যবদ্ধ আছি।

সংবাদ সম্মেলনে কাপ্তাই উপজেলা আ.লীগের সাবেক সহ সভাপতি, কাপ্তাই ইউপি চেয়্যারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, সাবেক সহ সভাপতি ও চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়্যারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী, উপজেলা আ.লীগের সাবেক যুগ্ন সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া, কেপিএম সিবিএ সাধারন সম্পাদক বাচ্চু, ওয়াগ্গা ইউপি চেয়্যারম্যান চিরঞ্জিত তনচংগা সহ কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, ৫টি ইউনিয়ন আ.লীগের নেতৃবৃন্দ, আওয়ামীলীগের ৮টি অঙ্গসহযোগী সংগঠনের উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন ইউপি’র চেয়্যারম্যান ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।