এম.নাজিম উদ্দিন:
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়াডের দুর্গম লংথিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গবতি বালা ত্রিপুরা ও দরুং ত্রিপুরা নামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। লংথিয়ান পাড়ায় ২০ জন ও আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে নারী,শিশু ও বৃদ্ধসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আরো অর্ধশতাধিক মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে।
বুধবার ভোর রাতে গবতি বালা ত্রিপুরা ও দুপুরে দরুং ত্রিপুরা নামে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার বনবিহারী চাকমা।
তিনি জানান,গত এক সাপ্তাহ ধরে সাজেকের লংথিয়ান পাড়া, অরুণ পাড়া,কাইজা পাড়া, রায়না পাড়া ও শিয়ালদহ এলাকাসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় ডাইরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এলাকায় আশপাশে কোন হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয় তান্ত্রিক দ্বারা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এলাকায় যাতায়াতের কোন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পায়ে হেঁটে এতো দূর থেকে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগী পাঠানো সম্ভব নয়। হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় যদি মেডিকেল টিম পাঠানো যায় তাহলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হবে,না হয় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
সাজেক ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার জোপুইথাং ত্রিপুরা জানান, শিয়ালদহ এলাকায় ১০ থেকে ১২ জন ডাইরিয়া রোগী রয়েছে,মূলত ছড়ার পানি থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। ২০১৬ সালে এখানে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মেডিকেল টিম দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণে আসে। এবারও দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে রোগীর সংখ্যা ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
এদিকে,বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এলাকটি খুবই দুর্গম, পায়ে হাঁটা পথ ছাড়া বিকল্প নেই। মূলত খাবার পানি থেকে এই রোগ ছড়াচ্ছে। আমরা সংবাদ পাওয়ার পরপরই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (ইউএইচএফপিও) ডাঃ অরবিন্দু চাকমার সাথে যোগাযোগ করে একটি মেডিকেল টিম পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পাশের বিজিবি বিওপি থেকেও স্যালাইন সরবরাহ করা হয়েছে,তবে খুবই সীমিত।
বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মেডিকেল অফিসার ডা.অরবিন্দু চাকমা বলেন,আমরা ইতোমধ্যে ৪ সদস্যদের একটি মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় ঔষধ স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ সাজেকের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে। সাজেকের কংলাক পাড়া থেকে পায়ে হেঁটে ঘটনাস্থলে পৌঁছুতে একদিন লাগবে। মেডিকেল টিম এর সদস্যরা পৌঁছালে আরো বিস্তারিত জানতে পারবো।