স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ ভাগাভাগির অভিযোগ

586

॥ নুরুল কবির ॥

বান্দরবানের দুর্গম থানচি এবং লামা উপজেলায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের মাঝে বিতরণের জন্যে নগদ অর্থ হিসেবে বরাদ্দকৃত ৬০ লাখ টাকা ভাগাভাগি করার অভিযোগ উঠেছে।

গত জুন মাসের আগেই এসব সরকারি কোষাগারের অর্থ উপজেলা চেয়ারম্যান,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রকৌশলীদের মধ্যে আনুপাতিক হারে ভাগাভাগি করার অভিযোগ উঠে। গত এপ্রিল-মে মাসের দিকে লামা উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত ৩০ লাখ টাকা এবং একই  সময়েই থানচি উপজেলার জন্য বরাদ্দপ্রাপ্ত ৩০ লাখ টাকা কথিত সংস্কার কাজের প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে হরিলুট করা হয়েছে বলে সচেতন মহল থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে দুদুকসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে।

রোববার দিনভর অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে,জেলার থানচি উপজেলায় গত এপ্রিল-মে মাসে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময়ে সারাদেশের জন্য সরকারের কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে বরাদ্দকৃত ৪৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার মধ্য থেকে বান্দরবানের থানচি ও লামা উপজেলার জন্য ৩০ লাখ টাকাহারে নগদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। গত জুন মাসের মধ্যেই এসব টাকা উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্র্তাদের (আয়ন-ব্যায়ন কর্মকর্তা হিসেবে)যুক্ত স্বাক্ষরে উত্তোলন করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাউচিং মারমা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্র্তা মো.জাহাংগীর আলম বলেন,ওই সময় থানচি উপজেলায় তালিকাভুক্ত কোন  ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার না থাকায় মন্ত্রণালয়ের মৌখিক অনুমিত নিয়ে উপজেলা পরিষদের সভার সিদ্ধান্তক্রমে ওই ৩০লাখ টাকায় দরপত্রের মাধ্যমে ৬/৭টি সংস্কার কাজের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে বিষয়টি এ উপজেলার একনজন জনপ্রতিনিধিকেও অবহিত করা হয়নি। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা অভিযোগে বলছেন- রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নগদ হিসেবে বিতরণের জন্য এসব টাকা বরাদ্দ করা হলেও তা অন্যখাতে গোপনে খরচ দেখানোর কোন সরকারি বিধিবিধান নেই। কথিত প্রকল্প দেখিয়ে এসব সরকারি অর্থ ভাগাভাগি করা হয়েছে বলেও মতপ্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

লামা উপজেলায় একই সময়ে একই কাজে স্থানীয় সরকার মমন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত ৩০ লাখ টাকা ভাগাভাগি করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

এ প্রসংগে সরই ইউপি চেয়ারম্যান,লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান এবং লামা পৌর মেয়র জানান, ওই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যান তাদের হাতে নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকাহারে প্রদান করেছিলেন। তারা এসব টাকা দুর্গত পরিবারদের মাঝে নগদ ও ডেউটিন ক্রয় করে বিতরণ করেছেন, যা ছিল খুবই অপ্রতুল অর্থ। তথ্য মতে কেবল লামা উপজেলাতেই ওই ৩০ লাখ টাকার বেশির ভাগ টাকাই ভাগাভাগি হয়ে গেছে উপজেলা চেয়ারম্যান,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রকৌশলীদের মাঝেই।

সচেতন মহল থেকে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে দুদুকসহ প্রশাসনের উর্ধতন মহলে। বিষয়টি বান্দরবানের সংসদ সদস্যদের নিকট জানানোর পর তিনি তদন্ত পুর্বক দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসককে  নির্দেশও প্রদান করেছিলেন। কিন্তু সেই বিষয়ে তদন্ত বা প্রতিকার এখনও করা হয়নি বলে জানা গেছে।

অভিযোগ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, তিনি ওই ৩০ লাখ টাকা থেকে ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছে নগদে দেড় লাখ থেকে ২ লাখ টাকা করে বিতরণ করেছেন দুর্গত পরিবারদের মাঝে বিলি করার লক্ষ্যে। চেয়ারম্যানরা এখনও পর্যন্ত বিলি-বিতরণের মাষ্টাররোল বা ভাউচার জমা দেয়নি।