॥ নুরুল কবির বান্দরবান ॥
স্বামীর নির্যাতনে মানসিক প্রতিবন্ধী, অতপর তিন মাস পথে প্রান্তরে ঘুরার পর নিজ পরিবারকে খুঁজে পেলেন কমলা বেগম (৪০) ও শিশু মেয়ে খুরশিদা (৩)। কমলা শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানার হরিয়া কাদিরচর গ্রামের আবদুল করিমের মেয়ে। তার স্বামীর নাম খুরশেদ আলম।
সম্প্রতি বান্দরবানের বাইশারী এলাকায় ক্ষুর্ধাত নিজ শিশুকে এই নারী নির্যাতন করছে দেখে এলাকার লোকজন নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশে দিয়েছিল কমলাকে। কিন্তু তাদের থানায় আনার পর পরিচয় জানতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ে পুলিশ। পুলিশের প্রতি উগ্র আচরন, গালিগালাজ এবং চিৎকার করতে থাকে নারীটি। ফলে থানায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে পুলিশ হিমশিমে পড়ে।
জানা যায়, কমলা বেগম (৪০) তার তিন বছরের শিশু খুরশিদাকে নিয়ে বিগত প্রায় ৩ মাস পূর্বে শেরপুর জেলার শ্রীবরদী বাড়ী থেকে বেরিয়ে যায়। তখন স্বামীর নির্যাতনে মানসিক ভারসাম্যহী হারিয়েছিল কমলা বেগম।
একসময় বিভিন্ন পথ ঘুরে কমলা আশ্রয় নিয়েছিল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী এলাকায়। অন্যদিকে পরিবার চারদিকে হন্যে হয়ে খুঁজেও সন্ধান পাইনি তার।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, ঠিকানাবিহীন অনাথ মানুষের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। যার কারনে মানসিক প্রতিবন্ধী ওই নারী ও শিশুটির বিষয়ে সমাজসেবা দপ্তরে যোগাযোগ করলেও কেউ দায়িত্ব নিতে চায়নি।
তিনি আরো জানান, প্রথমে অজ্ঞাত পরিচয়ের এই নারীর বিষয়ে পুলিশ সুপারকে জানানো হলে তিনি তাৎক্ষনিক মানবিকতার পরিচয় দেন এবং নারী ও শিশুর বিষয়ে সু-ব্যবস্থা নির্দেশ দেন। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নেওয়ার পর শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিন ও উপজেলা চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলামের সহযোগিতায় অবশেষে ৮নভেম্বর পিতা ও দুই ভাইয়ের কাছে কমলা ও তার শিশু বাচ্চাটিকে তুলে দেওয়া হয়েছে। এসময় কমলার পরিবার পুলিশের মানবিক এই কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
উল্লেখ্য, পুলিশের মূলকাজ অপরাধ প্রতিরোদ, সংগঠিত অপরাধের আইনগত ব্যবস্থা ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা। ঠিকানাবিহীন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য সরকারী অন্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কমলা আর নিষ্পাপ শিশু খুরশিদার দায়িত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন পর পরিবারের কাছে হস্তান্তরের এই মহতী কাজের জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি পুলিশ।