নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাঙামাটিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালন

716

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
সারাদেশের ন্যায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলায়ও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালন করা হযেছে। তবে কভিড ১৯ ঘিরে চলমান বৈশ্বিক মহামারির বিষয়টি মাথায় রেখে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে পুষ্টি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং উন্নয়ন সহযোগিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ২৩ এপ্রিল থেকে এই সপ্তাহের কার্যক্রম শুরু হয়ে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত পার্বত্য রাঙামাটি জেলায় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের নানামুখি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। এবারেও পুষ্টি সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ছিল- “খাদ্যের কথা ভাবলে পুষ্টির কথাও ভাবুন”।

রাঙামাটিতে পুষ্টি সপ্তাহ ঘিরে লীন প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মসূচিসমূহ বাস্তবায়ন করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় তিন পার্বত্য জেলায় ‘লিডারশিপ টু এনশিউর আ্যডিকোয়েট নিউট্রিশন’ নামক প্রকল্পকে সংক্ষেপে লিন প্রকল্প বলা হয়। প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান,  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রদও সপ্তাহব্যাপী পরিকল্পণা অনুযায়ী রাঙামাটি জেলা ও উপজেলার পুষ্টি সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ে লিন কর্ম এলাকায় পুষ্টি সপ্তাহের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

176608708_10223620832742508_6288866240250786230_nকার্যক্রমের মধ্যে ছিল- কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কে›ন্দ্রের সমন্বয়ে উক্ত কেন্দ্র গুলোতে গর্ভবতী, দুগ্ধদানকারী মা, কিশোরী এবং ০-৫ বছরের শিশুদের পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পুষ্টি বিষয়ক বিশেষ কাউন্সেলিং। এছাড়াও লিন প্রকল্প এলাকার ০-৫ বছরের শিশুদের ওজন এবং উচ্চতা পরিমাপের মাধ্যমে  জিএমপি কার্যক্রম, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মাদের যথাক্রমে এএনসি ও পিএনসি সেবা গ্রহনের জন্য কমিউনিটি পর্যায়ে বিশেষ কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

লিন প্রকল্প পুষ্টির বার্তা সম্বলিত পিবিসি বোর্ড জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারী বিভিন্ন অধিদপ্তরে প্রদান করে। এছাড়াও লিন প্রকল্প স্থানীয় ট্রেডিশনাল লিডার (হেডম্যান ও কার্বারী), বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় নেতা, স্থানীয় সেবাদান কারী, স্থানীয় কিশোর-কিশোরী এবং বিভিন্ন নারী উদ্যেগক্তা  দলের সদস্যদের মাধ্যমে স্থানীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সদস্যদের সমন্বয়ে প্রত্যন্ত এলাকায়  উঠান বৈঠক এর মাধ্যমে  পুষ্টি বিষয়ে  সচেতনতা বিষয়ক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। পাশাপাশি লিন প্রকল্প স্থানীয় মানুষের পুষ্টি বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করনের লক্ষ্যে কর্মএলাকার প্রতিটি ইউনিয়নের পুষ্টি বিষয়ক বিভিন্ন বার্তা প্রচার করা সহ জেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা এবং বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি বার্তা সম্বলিত বিলবোর্ড স্থাপন করেছে।

এছাড়াও লিন প্রকল্প জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পুষ্টি সপ্তাহের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। সর্বোপরি লিন প্রকল্প  উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত এলাকার শ্রেষ্ট পুষ্টি সেবা প্রদানকারী সমাপনী অনুষ্ঠানের পুরষ্কৃত করা হয়।

পুষ্টি সপ্তাহ ঘিরে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানাননো হয়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার কারণে বর্তমানে দেশে পুষ্টিহীনতায় শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমেছে। দেশে অতি দরিদ্রের হার ১০ শতাংশের নিচে, দরিদ্র রয়েছে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ।  বাংলাদেশ এখন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি খাতের উন্নয়নে সারা বিশ্বে রোল মডেল। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জনগণের পর্যাপ্ত পুষ্টির জোগান নিশ্চিত করা অপরিহার্য। কারণ বেঁচে থাকার জন্য শারীরিক, মানসিক ও কর্মদক্ষতা উন্নয়নে পুষ্টির গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।

দেশের প্রতিটি নাগরিককে জাতীয় সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে নারী-পুরুষ ও শিশুদের জন্য মানসম্পন্ন পুষ্টি নিশ্চিত করা জরুরি। এ জন্য খাদ্যের সঙ্গে পুষ্টির কথা ভাবতে হবে। এ লক্ষ্যেই জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালনের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।