॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাঙামাটি শহরে সমবয়সী বন্ধুকে ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তারই বন্ধু। বন্ধুকে হত্যার পর তঞ্চক আত্মগোপন করলেও ঘটনার ছয় ঘন্টার মধ্যেই তাকে গ্রেপ্তার করার কৃতিত্ব দেখিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে পুলিশ। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোরে শহরের বনরূপা কবরস্থান এলাকায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। হত্যার ঘটনা দেখে সাহায্য করতে এগিয়ে গেলে পাশ্ববর্তী মার্কেটের দারোয়ানকেও ছুিরকাঘাত করে পালিয়ে যায় ঘাতক।
নিহত যুবক এজাজুল হক রাব্বী (২৮) বনরূপা বিএম শপিং মলের ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হকের ছোট ছেলে। ঘটনা দেখে ফেলা মার্কেটের দারোয়ান আমীর আলী আহত অবস্থায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গ্রেপ্তারের পর হত্যার দায় স্বীকার করেছে নিহতের বন্ধু সেলিম মাহমুদ (৩৪)। আহত প্রত্যক্ষদর্শির বর্ণনা এবং ঘটস্থাস্থলের আলমত থেকে পুলিশ প্রাথমিক ধারণা গ্রহণের পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার ৫ ঘন্টার মধ্যেই হত্যাকারীর অবস্থান চিহ্নিত করে ফেলে। অভিযানের নেতৃত্ব দেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ (বিপিএম) নিজেই।
শনিবার বিকেলে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশের উদ্বর্তন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিন পরিদর্শনের পর নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি। এরপর পুলিশ সদস্যদের চারটি টিমে ভাগ করে সন্দেহজনক স্থানগুলোতে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেই।। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় বেলা সাড়ে ১১টায় তার অবস্থান নিশ্চিত হয় আমার ফোর্স। আসামীকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করে জানায়, পাওনা টাকা আদায় নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে এজাজুল হক রাব্বীকে হত্যা করে সে।
পুলিশ সুপার এও জানান, নিহত যুবক এজাজুল হক রাব্বী ২০২১ সালের একটি মাদক মামলার আসামী ছিল। মূলতঃ সেলিম মাহমুদের কাছ থেকে রাব্বী টাকা ধার নিয়ে সেগুলো ফেরত দেয়নি। শনিবার ভোররাতে রাব্বীর সাথে দেখা হলে তার টাকাগুলো ফেরত চায় সেলিম। এনিয়ে উভয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়। এসময় রাব্বীকে ছুরিকাঘাত করলে স্থানীয় দারোয়ান আমীর আলী তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে সেলিম তাকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমীর আলীকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তার চাচা।
এদিকে বুকে ছুরিকাঘাত করায় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে ঘটনাস্থলেই মারা যায় এজাজুল হক রাব্বী। গ্রেফতার হওয়া সেলিম মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা করবে পুলিশ। ঘটনার পর শহরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি এবং আতঙ্কের বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, আমি জনসাধারণকে পুলিশের উপর উপর আস্থা রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। শীঘ্রই রাঙামাটিতে মাদক, কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কিছু অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে যোগ করে পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ।