বর্ণাঢ্য আয়োজনে বনভান্তের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী পালন

364

p...3

 

স্টাফ রিপোর্টার, ৮ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্য সহকারে রাঙামাটি রাজবন বিহারে মহাপরির্বানপ্রাপ্ত বৌদ্ধ আর্যপুরুষ মহাসাধক শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৫টায় কেক কেটে শুভ সূচনা করা হয় বনভান্তের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠান। এসময় উড়ানো হয় হাজারো বেলুন। সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে রাজবন বিহারের চারিদিক। রাজবন বিহারের বনভান্তের সাধনাকুঠিতে কফিনে রাখা তাঁর মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সমবেত পুণ্যার্থীরা। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় বনভান্তের কফিনটি। পরে সকাল ৯টায় পুণ্যার্থীদের পঞ্চশীল গ্রহণ, ভিক্ষু সংঘের উদ্দেশ্যে বুদ্ধমুর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, হাজার প্রদীপ দানসহ বিভিন্ন দানযজ্ঞ সম্পাদন করা হয়।

অনুষ্ঠানে পুণ্যার্থীদের মাঝে ধর্মদেশনা দেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজবন বিহারসহ বিভিন্ন শাখা বন বিহারের ভিক্ষু সংঘ, চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, সাবেক উপমন্ত্রী মণিস্বপন দেওয়ান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, সাবেক চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি গৌতম দেওয়ানসহ অগণিত পুণ্যার্থী ও ভক্তকূল। এদিকে জুরাছড়ি তথা শলক এলাকার বাসিন্দারা এই ধর্মীয় গুরুর জন্ম বার্ষিকী পালনের জন্য একটি ৯৭ পাউন্ড ওজনের কেক নিয়ে আসে। জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উদয় জয় চাকমা ও জেলা পরিষদ সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমার তেতৃত্বে ভক্তরা কেকটি বনবিহার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় ১নং জুরাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ক্যানন চাকমাসহ উপজেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সাথে ছিলেন।
বৌদ্ধ আর্যপুরুষ মহাসাধক বনভান্তে ১৯২০ সালের ৮ জানুয়ারি রাঙামাটি সদরের মগবান মৌজার মোরঘোনা গ্রামের এক মধ্যবিত্ত চাকমা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মানব সংসারে দুঃখ-কষ্ট দেখে মহামতি গৌতম বুদ্ধের পথ অনুসরণ করে ১৯৪৯ সালে সংসার ছেড়ে বৌদ্ধ সন্যাসীর জীবন বেছে নেন সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তে। দীর্ঘ ১২ বছর বনে-জঙ্গলে কঠোর ধ্যান-সাধনার মাধ্যমে সিদ্ধিলাভ করেন। বনে-জঙ্গলে কঠোর ধ্যান-সাধনা করেন বলেই বনভান্তে নামে পরিচিতি লাভ করেন। পরবর্তীতে সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে বিনয় বিশুদ্ধ বুদ্ধ ধর্ম প্রচারে ব্রতী হন তিনি।

বর্তমানে বনভান্তের শিষ্যরা পার্বত্য চট্টগ্রাম পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করে ধর্ম প্রচার করছেন। ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি পরিনির্বাণ লাভ করেন শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তে।

পোস্ট- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান