স্টাফ রিপোর্টার
রাঙামাটির লংগদুতে চ্যানেল এস টিভি ও দৈনিক তৃতীয় মাত্রার প্রতিনিধি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার সকালে লংগদু উপজেলার স্থানীয় বেকারীর মালিক রাশেদুল আলম সাংবাদিকদের এই অভিযোগ করেন।
এনিয়ে বেকারি মালিক রাশেদুল আলম জানান, গতকাল সকালে চ্যানেল এস টিভি ও দৈনিক তৃতীয় মাত্রার প্রতিনিধি পরিচয়ে মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নামের এক সাংবাদিক ও তার সহযোগী জামান বিনা অনুমিতে আমার বেকারিতে প্রবেশ করে ছবি ভিডিও নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমার বেকারির বিরুদ্ধে অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতার অভিযোগ এনে সংবাদ প্রকাশের ভয়ভিতী দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন।
তিনি আরো বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম সত্যিই আমার কোনো অপরাধ হয়েছে। কিন্তু পরে যখন বারবার টাকা দাবি আর ভয়ভীতি দেখানো শুরু হলো, তখন বিষয়টা পরিষ্কার হয়। শেষে বাজারের মানুষজন জড়ো হলে তারা পালাতে চেয়েছিল। এবিষয়ে আমি আতঙ্কিত ও প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার সকালে আলম বেকারি নামে একটি প্রতিষ্ঠানে দুই ব্যক্তি প্রবেশ করে নানান ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। তাদের একজন নিজেকে চ্যানেল এস টিভির সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নামে পরিচয় দেয় ও অন্যজন কামরুল ইসলাম দূর থেকে নজরদারি চালায়। লিটন বেকারি মালিককে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে বলেন এবং একটি নাম্বার দিয়ে জানান, নিউজ রেডি হয়ে গেছে, অফিসে পাঠানোও হয়েছে। টাকা না দিলে চ্যানেলে প্রকাশ হবে, তাতে ব্যবসার ক্ষতি হবে। এসময় তিনি তাকে চ্যানেল এস’র লংগদু প্রতিনিধি পরিচয় দেন।
বিকেলে আবার ফোন পেয়ে মালিক বুঝতে পারেন এটি মূলত চাঁদাবাজির কৌশল। পরে সন্ধ্যায় সরাসরি বেকারিতে হাজির হন জামান মাষ্টার। তিনি কথিত সাংবাদিকদের হয়ে কথা বলার পাশাপাশি নিজেও নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। এমনকি চা-নাস্তা ও রুটি সরবরাহের কথাও বলেন। এছাড়া নগদ টাকা নেন। এসময় এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে হৈচৈ শুরু হয় এবং জনতার হাতে ধরা পড়েন জামান। পরে জানা যায়, সাংবাদিকের সহকারি তিনি স্থানীয় একটি বেসরকারি হাই স্কুলের খন্ডকালীন সহকারী শিক্ষক। এসময় তিনি ব্যবসায়ী রাশেদুল আলমের কাছ থেকে কয়েক হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চেয়ে এস টিভির প্রতিনিধি লিটন কে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
চ্যানেল এস এর রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি রাকিব জানায়, লংগদুতে চ্যানেল এস এর প্রতিনিধি কিভাবে নিয়োগ হয়েছে কোন কিছু আমার জানা নাই। আর চাঁদা আদায়ের বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই। যেহেতু আমার মাধ্যমে নিয়োগ হয়নি আর আমি অবগত নই। যদি প্রমাণিত হয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন লংগদু কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। জুলাই আন্দোলনে রাঙামাটিতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মূলত অতীতের অপকর্ম ঢাকতেই সাংবাদিক পরিচয়ে ও বর্তমানে রং পরিবর্তন করে বিভিন্ন দলের পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় পূর্বের মত আধিপত্য বিস্তার করে যাচ্ছেন।#