আজ মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদ মাছ আহরণের জন্য উন্মুক্ত হবে

480

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

টানা তিনমাস বন্ধ থাকার পর আজ মধ্যরাত (পহেলা আগস্ট মধ্যরাত) থেকে মিঠাপানির মাছের অন্যতম উৎস কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদে মা মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরনসহ হ্রদে অবমুক্ত করা কার্প জাতীয় মাছের পোনার সুষ্ঠু বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত পহেলা মে মধ্যরাত থেকে এই হ্রদে মাছ আহরন, পরিবহন এবং বাজারজাত করনের উপকরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।

এ বছর মাছ ধরা বন্ধকালীন মওসুমে বিএফডিসি ও প্রশাসনের কঠোর নজরদারী থাকায় অবৈধ মাছ শিকারের প্রবণতা বেশ নিয়ন্ত্রণে ছিল। এ ছাড়া বিএফডিসি হ্রদ হতে জাঁক অপসারনসহ কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে। এই সুবাদে ধারণা করা হচ্ছে এ বছর কাপ্তাই হ্রদে মাছের মওজুদ অন্যান্য বছরের তুলনায় ইতিবাচক হবে।

গত রোববার রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরন বন্ধের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ক এক সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন, রাঙামাটি কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মোঃ আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ, রাঙামাটি জেলার মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রহমান, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী মোঃ বেলাল উদ্দিন সহ কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য আহরনের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মাছ আহরনের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং পহেলা আগস্ট থেকে মাছ আহরন উন্মুক্ত করার বিষয়ে জানানো হয় মাছ আহরনকালীন সময় কাপ্তাই হ্রদের মাছের ৬ টি অভয়াশ্রমে মাছ শিকার বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি হ্রদের মাছের জন্য ক্ষতিকারক জাল ব্যবহার নিষিদ্ধ, সেগুলো ব্যবহার করা যাবেনা। একই সাথে পোনা মাছ আহরন ও বন্ধ থাকবে।

সভায় মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন মৌসুমে কাচালং ও কর্ণফুলীর দুটি  চ্যানেল হতে কার্প জাতীয় মা মাছের প্রাকৃতিক প্রজননকৃত ডিম সংগ্রহ করে সেগুলো থেকে আঙ্গুলি পোনা উৎপন্ন করা হয়েছে যা কাপ্তাই হ্রদের কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এছাড়া এই বছর মাছ ধরা বন্ধ মৌসুমের শুরুতেই কার্প জাতীয় মাছের পোনা হ্রদে অবমুক্ত করায় সেগুলো বৃদ্ধির পরিবেশ পেয়েছে।

সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান জানান কাপ্তাই হ্রদের জন্য জাক পদ্ধতিতে মাছ আহরন অত্যন্ত ক্ষতিকর। এবছর বিএফডিসির সহায়তায় জেলা প্রশাসন জাক বিরোধী অভিযান চালিয়ে একাধিক জাক ধ্বংস করেছে। তবে এখন থেকে কাপ্তাই হ্রদে কোন প্রকার জাঁকের অস্তিত্ব রাখা হবেনা। জাঁক ব্যবহারকারী মৎস্য ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে মামলা দায়ের করে তাদের শাস্তি প্রদান করা হবে। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে নেট দিয়েও মাছ চাষ করা যাবেনা।

সভায় কাপ্তাই হ্রদে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে  কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন স্থানের গভীর অংশে খাঁচায় মাছ চাষ করার বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানানো হয়।