আজ রাঙামাটিতে ভূমি কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠক

334

rangamati-map
॥ আলমগীর মানিক ॥ আজ রোববার রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত  হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন এর দ্বিতীয় বৈঠক। কমিশন আইন সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনরত পাঁচ বাঙালি সংগঠনের ডাকা অবরোধের প্রেক্ষাপটে বৈঠকে যোগ দিতে কমিশন চেয়ারম্যান একদিন আগেই গতকাল রাঙামাটিতে এসে পৌঁছান।

জানা গেছে, চেয়ারম্যান রাঙামাটি সার্কিট হাউজে অবস্থানকালে তার সাথে শনিবারই সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার।

দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত বৈঠকে যোগ দিতে আসা ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ আনোয়ারউল হক এর সাথে রয়েছেন কমিশন সচিব রেজাউল করিম ও রেজিস্টার সোয়াইব খান। শনিবার বেলা এগারোটার দিকে তারা রাঙামাটি সার্কিট হাউজে এসে পৌছান বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর ফারুক সুফিয়ান।

এদিকে কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সার্কিট হাউসে অবস্থানকালীন সময়ে শনিবার ভূমি কমিশন চেয়ারম্যানের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। তবে এটা বৈঠকের অংশ নয়, নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলে অভিহিত করেছেন সূত্রটি।

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সংশোধন আইন-২০১৬ গেজেট আকারে প্রকাশ হওয়ার পর এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর উক্ত আইনটি জাতীয় সংসদে পাশ হওয়ার পর আজ কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

পূণর্গঠিত কমিশন কাজ শুরুর পর পাহাড়ে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ৮ সেপ্টেম্বর জারী করা এক গণ বিজ্ঞপ্তিতে বিরোধপূর্ণ ভূমির মালিকানা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন করার আহ্বান জানায়। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই কমিশনের আহবানে সাড়া দিয়ে প্রায় ১৪ হাজার ৮শ’ সংক্ষুব্দ ব্যক্তি তাদের প্রতিকার চেয়ে কমিশনে আবেদন জানিয়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে পাহাড়ি, বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের বিচারপ্রার্থী রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কমিশন সূত্র।

স্মরণযোগ্য যে, এরআগে কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি খাদেমুল ইসলামের মেয়াদকালীন সময়েও গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সে সময় ৪ হাজার ৪০৮টি আবেদন জমা পড়েছিলো।

এদিকে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সংশোধনী আইন ২০১৬ সংসদে বিল আকারে পাশ হওয়ার পর থেকেই তা বাতিলের দাবিতে পাঁচ বাঙালি সংগঠনের ডাকে চলতি মাসের ১৩ ও ২০ তারিখে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে হরতাল কর্মসূচি পালন করা হয়। হরতাল চলাকালে খাগড়াছড়িতে ল্যান্ড কমিশনের প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করে বাঙ্গালী সংগঠনগুলো।

দ্বিতীয়বারের মতো রাঙামাটিতে অনুষ্ঠেয় এই বৈঠক ঘিরেও পার্বত্য চট্টগ্রামের দুইটি জেলায় আবারও সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছে ওই পাঁচ বাঙ্গালী সংগঠন। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় শুধুমাত্র সড়ক পথে ৩০শে অক্টোবর রোববার সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি পালনের জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাঙ্গালী সংগঠনগুলো।