আন্দোলনেও বন্ধ হয়নি রুমায় পাথর উত্তোলন

260

p.....5

শৈহ্লাচিং মারমা- ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : উপজেলা প্রশাসনের কোনো প্রকার পদক্ষেপ না থাকায় পলিখালসহ বিভিন্ন ঝিরি-ঝরনা থেকে পাথর উত্তোলণ এখনো বন্ধ হয়নি। ক্ষমতাসীন ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় অবাধে পাথর উত্তোলণ চলছেই। পাথর উত্তোলণ অব্যাহত থাকায় ছড়া-ঝিরিগুলোতে পানি প্রবাহের উৎস বন্ধ হয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এঅবস্থায় এলাকার লোকজনের মধ্যে অসন্তোষ ও চাপা ক্ষোভ বেড়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড (পাচউবো) ও উপজেলা পরিষদের ত্রাণ শাখার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের চারটি ইউনিয়নের সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে ব্যবহারের জন্য এসব পাথর উত্তোলণ করা হয়। তবে প্রাকৃতিক ছড়া-ঝিরি থেকে পাথর উত্তোলণকারিদের প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেই। উপজেলায় বিভিন্ন জায়গা থেকে অবৈধভাবে অব্যাহত পাথর উত্তোলণে একদিকে প্রশাসন ব্যাপকহারে রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে বিপন্ন হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ। কিন্তু এখানে নেই কার্যকরি ব্যবস্থার পদক্ষেপ।

এ প্রতিবেদক গতকাল মঙ্গলবার(২৩.০২.১৬) সরেজমিনে গিয়ে দেখেন রুমা সদরে নিউ এডেন হতে মিনঝিরি পাড়া যাওয়ার পথে পলিখালের উপর নির্মাণাধীন সেতু এলাকায় ছোট বড় ২৫টি বোল্ডার পাথরের স্তুপ রয়েছে। এখানে পাথর উত্তোলণ অব্যাহত আছে। এসব পাথর পলিখাল থেকেই আহরণ করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের এক কোটি বিশ লক্ষ টাকার ব্যয়ে বৌদ্ধ বিহার ও পাড়া সিড়িঁসহ চারটি উন্নয়ন কাজ চলছে।

যুবলীগের সভাপতি সুধীর দাশের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধঙ্গুল দেখিয়ে অবাধে পাথর উত্তোলণের অভিযোগ পাওয়া ওঠেছে। এ কাজের নিয়োজিত সুধীর দাশ বলেন সেতুর এলাকায় স্তুপ করা সংগ্রহিত পাথরগুলো একটি বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ করতে স্থানীয়দের কাছ থেকে কেনা হয়েছে। পাইন্দু ইউনিয়নের ক্যলুক্ষ্য পাড়া বাসিন্দা উসাইমং মারমা (৪২) ও গরামং মারমা(৩৬) জানান পাড়া যাওয়ার রাস্তায় দু‘টি সেতু নির্মানের জন্য গাড়ি করে মিনঝিরি পাড়া থেকে এসব পাথর আনা হয়েছে। আনুমানিক পাঁচ হাজার ঘনফুট বোল্ডার হবে। এসব পাথর ঠিকাদার সুধীর দাশের বলে তিনি জানিয়েছেন। পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান ক্যসাপ্রু মারমা ক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় বলেন অবৈধ পাথর উত্তোলণ কাজে সংশ্লিষ্টরা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা। তারা অশিক্ষিত সাধারণ মানুষের লোভ দেখিয়ে প্রাকৃতিক ঝিরি-ঝরনাগুলো থেকে অবাধে পাথর আহরণ করা হচ্ছে।

এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান অংথোয়াইচিং মারমা বলেন, পাহাড়ে পানির উৎসের প্রবাহ টিকিয়ে রাখতে সকল পাড়ার প্রধান কারবারীকে ঝিরি-ঝরনায় পাথর উত্তোলণ না করতে চিঠি জারী করাহয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো পাড়ার লোকজন ঝিরি-ঝরনা থেকে ৪০হাত দুরত্ব না রেখে ঝুম কাটা হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনের আওতায় আনা হবে।

পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান