আড়ষ্টতা কাটিয়ে পর্যটক বাড়তে থাকায় রাঙামাটির অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠছে

434

॥ মোঃ নাজিম উদ্দিন ॥
নোভেল করোনা ভাইরাসের ধাক্কাকে সামলিয়ে আবারো পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে রাঙামাটি জেলা। মহামারি করোনার প্রভাবে দীর্ঘ সময় পর্যটনের স্থবিরতার পর পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ায় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে পর্যটক। এতে করোনাকালীন লোকসানের অনেকটাই পুসিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা; চাঙা হয়ে উঠেছে পর্যটন খাত।

পাহাড়ের পর্যটন ঘিরে মূলত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই শুরু হয় পর্যটন মৌসুম। তাই অনানুষ্ঠানিক লক ডাউন শেষ করে পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ায় এরই মধ্যে পাহাড়ি এই জেলার প্রায় সব পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রে ভ্রমণপিপাসুদের সমাগম বাড়ছে। জেলার ‘দার্জিলিং খ্যাত’ সাজেক ভ্যালি,‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতুসহ পলওয়েল পার্ক, ধুপপানি ঝরনা, সুবলং ঝরনা এমনকি নতুন চালু হওয়া কলা বাগান ঝরনায় গিয়ে দেখা গেছে প্রতিনিয়ত পর্যটকদের ভিড় লেগে রয়েছে।

গেলো এক সপ্তাহে রাঙামাটির পর্যটন ঝুলন্ত সেতুতে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সরকারি বন্ধের দিন শুক্রবার ও শনিবারের ছুটি পাহাড়ে কাটাতে ভিড় করছেন বিনোদন প্রেমীরা। এতে চাঙা হয়েছে এই খাতসংশ্লিষ্ট সবার ব্যবসা-বাণিজ্য।

রাঙামাটি পর্যটন বোটঘাটের ম্যানেজার মো.রমজান আলী জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সুবলং এর উদ্দেশে ৩০টি ট্যুরিস্টবোট ছেড়ে গেছে। এছাড়া ২০টির অধিক ট্যুরিস্টবোট আশপাশের লেকে ঘুরা বেড়ানোর জন্য ভাড়া হয়েছে। মোটামুটি বলা চলে আমাদের ব্যবসা ভালো হচ্ছে। আমাদের বোট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সবাই আনন্দিত।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা মো.মোকাম্মেল হোসেন জয় বলেন,এর আগে কখনোই আমার রাঙামাটি আসা হয়নি। পাহাড় লেকের সানিন্দ্যে এসে অনেক ভালো লাগছে। কাল সুবলং ঝরনার যাবো ঘুরতে।

রাঙামাটি জেলা শহরের দৃষ্টিনন্দন পার্ক পলওয়েলে ঘুরে বেড়ানো একঝাঁক ভ্রমণপ্রেমী জানান,কিভাবে একটি কৃত্রিম পর্যটন-বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলা যায় তার অনন্য উদাহরণ পলওয়েল পার্ক। আমরা এখানে এসে ভালোই সময় কাটাচ্ছি।
সাজেকে বেড়াতে আসা আজিজুর রহমান জানান,করোনায় বাসাবাড়িতে বন্দি থেকে মানসিক ভেঙে অনেকটাই ভেঙে পড়েছি। সেই অবসাধ কাটাতেই সাজেক এলাম। সাজেকের প্রেমে আমরা মুগ্ধ।

তিনি বলেন,সাজেকে এসেই বুঝলাম কেবল আমরাই না, কোনো ভ্রমণপিসাসুরা এখন আর ঘরে নেই। আমরা আসার এক সপ্তাহ আগে রুম বুকিং দিয়েও রুম পেতে কষ্ট হয়েছে।

রাঙামাটি শহরে অবস্থিত হোটেল মতি মহলের মালিক মো. শফিউল আজম বলেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে আমরা চেষ্টা করছি। মোটামুটি পর্যটকদের রাঙামাটিতে সমাগম বাড়ছে। আশাকরি শীত বাড়লে পর্যটক আরো বাড়বে।

সাজেক কটেজ ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ জানান,মোটামুটি সাজেক এখন পর্যটকে ভরপুর। শুক্রবার শনিবারে এ সংখ্যা আরো বাড়ে। যেভাবে পর্যটক আসছে এতে আমরা সন্তুষ্ট।