পাহাড়ের ৯৭টি পুরাতন বেইলী সেতুর স্থলে পিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করছে সওজ

789

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

নিরাপদ ও টেকসই যাতায়াত নিশ্চিত করতে রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলার ৯৭টি পুরাতন ও জরাজীর্ণ বেইলী সেতু বাদ দিয়ে ওইসব স্থানে পিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। দুর্গম পার্বত্য জেলাগুলোর পাহাড়ি পথগুলো গাড়ি চলাচলের উপযোগী করতে স্বাধীনতার পর তাৎক্ষণিকভাবে বেইলী সেতু দিয়ে সড়ক সংযোগ করা হয়।

পাহাড়ি ছড়াগুলোর প্রবাহ ঠিক রাখতে এসব এলাকায় কখনই বাঁধ করার চিন্তা করা যায়নি। যে কারণে বেইলী সেতুই ছিল তাৎক্ষণিক সমাধান। এসব সেতুর কোনোটার বয়স ৫০ বছর আবার কোনোটার বয়স পাঁচ বছর। স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দীতেও এসব বেইলী সেতুর স্থলে স্থায়ী গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ করা না হওয়ায় বেশ কিছু এলাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে স্থানীয়রা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবার এসকল সেতুর বিষয়ে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে।

‘এই প্রকল্প অনতিবিলম্বে গ্রহণ করে আগামী দুই বছরের মধ্যে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে’। পাশাপাশি ‘উপজেলা সংযোগ সড়কসমূহ ডিবিএস ওয়েরিং কোর্স তথা ওভারলেসহ সকল সড়ক উন্নয়ন ও মেরামতের লক্ষ্যে পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে’ বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন।

তিনি শনিবার (২৪ অক্টেবর) পাহাড়ের সড়ক ব্যবস্থাপনা পরিদর্শনে এসে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন সওজ এর চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান, রাঙামাটি সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহাম্মদ।

রাঙামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহে আরেফীন ও খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল এ সময় উর্ধতন কর্মকর্তাদের সড়কসমূহ সরেজমিনে ঘুরিয়ে দেখান। পরিদর্শনকালে রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলা সড়ক বিভাগীয় অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধান প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে সওজ ডাকবাংলায় সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চট্টগ্রাম জোনের পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও রাঙামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহে আরেফীন ৩ পার্বত্য জেলার সড়ক উন্নয়নে বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন কার্যক্রম, সড়ক সমূহের বর্তমান অবস্থা ও আগামী পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।

প্রধান প্রকৌশলী এ সময় বলেন, বর্তমান সরকারের ভিশন হলো একটি সাবলীল মহাসড়ক নেটওর্য়াক গড়ে তোলা এবং মিশন হলো মহাসড়ক মেরামত, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়ন ও সম্প্রসারনের মাধ্যমে জনগনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে টেকসই, নিরাপদ ও মানসম্মত সড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা। সড়ক ও জনপথ অধদিপ্তরের সকল জনশক্তিকে সততা, আন্তরিকতা ও টীম স্প্রীডের মাধ্যমে সরকারের এ ভিশন বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় গাড়ী ও যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতা দূর করতে উদ্যোগ নিবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

সভার এক পর্যায়ে শ্রমিক কর্মচারীদের নেতা এবিএম তোফায়েল উদ্দিন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অবশিষ্ট ওয়ার্কচার্জ শ্রমিক-কর্মচারীদের মানবেতর জীবন যাপনের কথা উল্লেখ করে তাদেরকে নিয়মিত করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধান প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এ বিষয় মহামান্য হাইকোর্ট কর্মচারীদের পক্ষে রায় করলেও আপীলের কারণে বিষয়টি ঝুলে আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রধান প্রকৌশলী মহোদয় এ ব্যাপারে প্যানেল ল-ইয়ার এর সংগে আলোচনাক্রমে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। প্রসঙ্গত, রাঙামাটিতে ৫৭ জন ও খাগড়াছড়ির ৩৫ জন কর্মচারীর চাকুরি নিয়মিত করণের বিষয়টি চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।