আলমগীর মানিক , ৩১ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : পার্বত্য চট্টগ্রামে কর্মরত এনজিওগুলো প্রত্যেকেই প্রায় অভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে কাজ করে বলেই এখানে এনজিও কর্মকান্ড নিয়ে বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। ফাইলপত্রে তারা কাগজপত্র ঠিকই সাজিয়ে রাখছে। রিপোর্ট দেখে মনে হয় জলবায়ু ট্রাষ্ট, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা-স্যানিটেশনসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে এনজিওগুলো পিছিয়ে পড়া পাহাড় উদ্ধার করে ফেলছে। কিন্তু বাস্তবচিত্র ভিন্ন। এরমধ্যে কোনটিতে কার অবদান কতটুকু সেটি খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর, এমন মন্তব্য করেছেন রাঙামাটি জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা জামান। তিনি বলেন, একই ধরনের অনেকগুলো বিষয় নিয়ে সকলেই একই পদ্ধতিতে কাজ না করে সেক্টর ভিত্তিক বিষয়গুলো নিয়ে আলাদা আলাদা কাজ করলে এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
জেলা প্রশাসনের মাসিক এনজিও সমন্বয় সভায় এনজিওগুলো পূর্ববর্তী মাসের কর্মকান্ড তুলে ধরার কথা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য এবং দৃষ্টিকটু বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা বিগত মাসে বা তার আগের মাসে কি ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন এবং এতে করে অগ্রগতি কি পরিমান হয়েছে, আপনাদের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরবেন অথবা কোনো প্রকার বাধার সম্মুখীন হয়েছেন কিনা এসব তথ্য তুলে ধরার জন্যই সমন্বয় সবা করা হয়। কিন্তু আপনারা তা করছেন না; এতে জবাবদিহিতা থাকছে না। সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ ও বিধিবদ্ধ সকল উন্নয়ন সংস্থাকে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার মধ্যে থেকেই কাজ করতে হবে। অন্যথায় উন্নয়ন স্বপ্নেই থেকে যাবে।
রোববার রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের মাসিক এনজিও সমন্বয় এই মন্তব্য করেন রাঙামাটি জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা জামান। সভায় কর্মরত এনজিওসমূহের কর্মকর্তাগণ ছাড়াও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বৈশাখী বড়–য়া, জেলা পুলিশের ডিআইওয়ান ইসমাঈল হোসেন, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় এডিসি জেনারেল বলেন, রাঙামাটি কর্মরত এনজিও গুলো অনেকেই নিজের মতো করে কর্মকান্ড পরিচালিত করছে। এটা মানা যায় না উল্লেখ করে তিনি আইন মেনে জবাবদিহিতার সাথে উন্নয়নের ¯্রােত ধারায় নিজেদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার জন্য জেলায় কর্মরত বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর প্রতি আহবান জানান। তিনি প্রতিমাসে কাজের অগ্রগতি প্রদানের বিষয়টি বাধ্যতামুলক করা হবে বলে জানান এনজিও কর্তাদের।
এতে করে অনুমান করা যায় জবাবদিহিতা না থাকায় রাঙামাটি তথা পার্বত্য চট্টগ্রামে এনজিওগুলো মূলতো লুটপাটের কাগুজে এনজিওতে পরিনত হয়েছে।
সম্পাদনা- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান