ট্রাফিক সপ্তাহে রাঙামাটিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ৪৩৮ মামলা

380

 ॥ আলমগীর মানিক ॥

সারাদেশের ন্যায় পার্বত্য রাঙামাটিতেও সপ্তাহব্যাপী পালিত হয়েছে ট্রাফিক সপ্তাহ।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন সড়কে সপ্তাহকালব্যাপী পরিচালিত ট্রাফিক অভিযানে সর্বমোট ৪৩৮ মামলা দায়ের করার পাশাপাশি অর্থদন্ড প্রদানের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রেরণ করা হয়েছে আদায়কৃত ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬৫০ টাকা। রাঙামাটিস্থ ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) নীতি বিকাশ দত্ত উপরোক্ত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অদক্ষ চালক, গাড়ির ডকুমেন্ট ফেইল, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন না করা, সীট বেল্ট না বাঁধা, ফিটনেস বিহীন গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামাসহ মোটরযান অধ্যাদেশ লঙ্গণের বিষয়ে চালানো গত সাতদিনের বিশেষ অভিযানে কোনো গাড়ি জব্দ করা নাহলেও ১০৭টি সিএনজি অটোরিক্সা, বাস-২২টি, ট্রাক ১৫টি, কাভার্টভ্যান-৬টি, পিকআপ-৮টি, মাইক্রো-৬, প্রাইভেট কার-৩, হিউম্যান হলার ১টি ও ১৭৬টি মোটর সাইকেল এর বিরুদ্ধে রাঙামাটির ট্রাফিক পুলিশ ৩৪৪টি মামলা দায়ের করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন শহরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোঃ ইসমাঈল।

অন্যদিকে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদের নির্দেশে ট্রাফিক সপ্তাহে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় ৯৪টি যানবাহনের বিরুদ্ধে ৯৪টি মামলা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষনিক বিচার প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তিকৃত এসব মামলার বিপরীতে ৩৩ হাজার ২শ টাকা জরিমানা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। অন্যদিকে জেলার পুলিশ সুপার আলম কবির এর সার্বিক তত্বাবধানে রাঙামাটি পরিচালিত অভিযানে ৩৪৪ মামলার পাশাপাশি নগদ জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১লাখ ৫৩ হাজার ৬৫০ টাকা।

পুরো ট্রাফিক সপ্তাহ চলাকালীন সময়ে রাঙামাটি চালকদের মাঝে অসচেতনতার বিষয়টি ব্যাপকহারে লক্ষ্য করা গেছে মন্তব্য করে রাঙামাটির পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর কবির বলেছেন, ৫২ সপ্তাহের বছরে এক সপ্তাহব্যাপী ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করে আমরা কতটুকু সাফল্য অর্জিত করতে পেরেছি বা পারবো এটা প্রশ্ন সাপেক্ষ ব্যাপার।

তিনি বলেন, মূলত তৃণমুল থেকে তথা পরিবারের প্রাথমিক পর্যায় থেকে আমাদের সকলকে আইন মেনে চলার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। অন্যথায় আমরা বারংবার এই ধরনের প্রোগ্রাম করলেও অর্জিত সফলতা বেশ নগন্যই হবে।
প্রত্যেক নাগরিকের মানসিকতার পরিবর্তনের মাধ্যমেই নিরাপদ সড়ক তথা একটি সুন্দর সু-শৃঙ্খল অপরাধমুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মান সম্ভব।

এদিকে, রাঙামাটির ট্রাফিক বিভাগের ইন্সপেক্টর নীতি বিকাশ দত্ত জানিয়েছেন, আমাদের পাহাড়ি এই জেলার চালক ভাইরা অনেকেই এখনো পর্যন্ত জানেই না কেন গত একটি সপ্তাহজুড়ে ট্রাফিক সপ্তাহ চললো। এর একমাত্র কারন হলো চালকদের ব্যাপকহারে অসচেতনতা। কোনোমতে একটি লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারলেই তারা রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নেমে পড়ে। দুনিয়াবি আর কোনো কিছুরই খবর রাখেননা। এই কারনেই তারা মোটরযান আইন বা নিয়ম-কানুন কিছুই বুঝেননা এবং মানেনা। এটা থেকে দূর্ঘটনার হার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এদিকে, রাঙামাটির উপজেলাগুলোর মধ্যে সদর ছাড়া কাপ্তাই উপজেলাতে ট্রাফিক সপ্তাহে ব্যাপক অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এখানকার নৌ-স্কাউট সদস্যদের সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনার নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। মোটরযান আইন মানতে নাগরিকদের অভ্যস্থ করতে সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই প্রশাসনের এই কর্মকর্তাকে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের মাঝখানে দাঁিড়য়ে গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র চেক করার পাশাপাশি চালকদেরকে মোটরযান আইন সম্পর্কে সম্যক ধারনাও প্রদান করতেও দেখা গেছে পুরো সপ্তাহজুড়ে।

তিনি জানিয়েছেন ট্রাফিক সপ্তাহে তার উপজেলায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১৪৬ টি যানবাহন এর বিরুদ্ধে মামলাসহ ৬টি যানবাহন জব্দ করার পাশাপাশি জরিমানা বাবদ আদায় করা হয়েছে ১৩ হাজার একশো টাকা।