এম.নাজিম উদ্দিন , ১৩ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : জনদাবি সত্ত্বেও দীর্ঘ ২০ বছরে চালু হয়নি রাঙামাটিতে প্রস্তাবিত ১০ শয্যার হাসপাতাল। ১৯৯৫ সালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভায় পুরাতন হাসপাতাল ভবনে এই হাসপাতাল চালুর প্রস্তাব নেওয়া হয়, কিন্তু ২০ বছরেও এ সিদ্ধান্ত আলোর মুখ দেখেনি। ম্যালেরিয়াসহ প্রাণঘাতি নানারোগের সুতিকাগার রাঙামাটির স্বাস্থ্যসেবা নানাভাবে অবহেলিত। চিকিৎসক সঙ্কট, অবকাঠামোর অপ্রতুলতা এবং যন্ত্রপাতির অভাবে নিজেই রুগ্ন এখানকার স্বাস্থ্যসেবা। যে টুকু আছে যোগাযোগ দুর্গমতার কারণে সে সুবিধাটুকু নিতেও হিমসিম খায় নি¤œ আয়ের মানুষ। এই প্রেক্ষাপটে প্রায় দুই দশক আগে রাঙামাটি পুরাতন হাসপাতালের পরিত্যক্ত ভবনে একটি ১০ শয্যার মিনি হসপিটাল চালু করার প্রস্তাব গৃহীত হয়। এটি চালু হলে শহরের বেশকিছু এলাকার নি¤œ আয়ের মানুষ অতি সহজে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতে পারতো।
এ সম্পর্কিত তথ্য ঘেটে জানা যায়, সে সময়ে রাঙামাটি পুরাতন হাসপাতালকে স্থানান্তর করে রাজবাড়ি এলাকায় বর্তমান রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। তখন শহরের দুই ঘনবসতি এলাকা রিজার্ভ বাজার ও তবলছড়ির বিশাল জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবার কথা চিন্তা করে পুরাতন হাসপাতালে একটি ১০ শয্যার চালু করার সিদ্ধান্ত হয়। জেলা পরিষদ ও স্বাস্থ্য বিভাগের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে দীর্ঘ দিনেও এ দুই প্রান্তের মানুষ চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। বর্তমান হাসপাতালটি শহরের একপ্রান্তে হওয়ায় রিজার্ভ বাজার ও তবলছড়ি এলাকার হত দরিদ্র মানুষ রাত দুপুরে জরুরী রোগি নিয়ে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বঞ্চিত হচ্ছে কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্য সেবা থেকে। রাঙামাটি শহর থেকে জেনারেল হাসপাতালটি দুরবর্তী স্থানে অবস্থিত হওয়ায় রিজার্ভ বাজার এলাকার পাথরঘাটা, চেঙ্গীমুখ, জালিয়াপাড়া, জুলিককা পাহাড়, পুরান পাড়া, গীতাশ্রমকলোনী, তবলছড়ির ওমদামিয়াহিল, পর্যটন এলাকা, বালুখালী, মসজিদ কলোনী, স্বর্ণটিলা, আসামবস্তী, খিপ্পাপাড়া, বিলাইছড়ি পাড়া, মাঝেরবস্তী, আনন্দবিহার, কাটাপাহার, পুলিশ লাইন এলাকার হাজার হাজার মানুষ হাসপাতালের জরুরী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্তত ১০ শয্যার হাসপাতাল ব্যবস্থাটি চালু করা গেলে এসব এলাকার মানুষ জরুরী চিকিৎসা সেবা পাবে।
মানুষের এই দাবির কথা বিবেচনা করে জেলা পরিষদ পুরাতন হাসপাতালে ১০শয্যার চিকিৎসা ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। হাসপাতাল চালুর বিষয়ে স্থাস্থ্য বিভাগ পরিকল্পনাও গ্রহণ করে। স¤প্রতি জেলা পরিষদের বাজেটে ঘোষণা অনুষ্ঠানে ১০ শয্যার হাসপাতালের দাবি পুনরায় উত্থাপিত হলে চেয়ারম্যান বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেন। কিন্ত হাসপাতাল চালু করতে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে প্রকল্পটি ঝুলে আছে বলে মত প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টরা।
পোস্ট- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান