ব্যক্তির খেয়াল খুশীমতো বিদ্যুৎ খুঁটি স্থানান্তর প্রক্রিয়া অব্যাহত

411

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের, চোরাই খুঁটি দিয়ে বিভাগীয় সিদ্ধান্তের বাইরের ব্যক্তির খেয়াল খুশীমতো ১১ হাজার কেভির বিদ্যুৎ খুঁটি স্থানান্তরের প্রক্রিয়াটি অব্যাহত রয়েছে। সোমবারও বিতর্কিত বিদ্যুৎ খুঁটিটি বহাল তবিয়তে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

রাঙামাটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে সবার চোখের সামনে কোনো নিয়ম বিধির তোয়াক্কা না করেই ্এই খুঁটি অপসারনের পেছনে বড় একটি চক্রের সিন্ডিকেট ব্যবসার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন সংস্থার সাথে কথা বলে জানা গেছে, শহরের আঞ্চলিক পরিষদ রেস্ট হাউজের সম্মুখে প্রধান সড়কের পাশে স্থাপিত এই খুঁটিটি সরানোর বিষয়ে কোনো কর্তৃপক্ষের সাথেই যোগাযোগ করেনি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এমনকি বিষয়টি বিদ্যুতের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীরও জানা নেই। অথচ ১১ হাজার কেভির সঞ্চালন লাইনে এ ধরণের মেজর কাজ করার জন্য তার অনুমোদন বাধ্যতামুলক।

রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি প্রকৌশলী নেপচুন খীসা এই সংস্কার কাজ দেখে নিজেও অবাক হয়েছেন দাবি করে বলেন, বুধবার সকালে আমি এমন একটি অননুমোদিত সংস্কার কাজের খবর পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে লোকজনকে ধাওয়া করি। এসময় খুটিটি লাগানোর কাজে নিয়োজিত লোকজন পালিয়ে যায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি নিজেই বিষয়টি বুঝতে পারছিনা এই খুঁটিটি কোথা থেকে কিভাবে এবং কারা এখানে নিয়ে আসলো এবং মাটি খুঁড়ে স্থাপন করা হলো।

এদিকে রাঙামাটি বিদ্যুত বিভাগের স্টোর কিপার এর দায়িত্বে থাকা হুয়ামন কবির রতন জানিয়েছেন, এ ধরণের কাজের জন্য স্টোর থেকে খুঁটি নেওয়ার কথা। কিন্তু আমার স্টোর থেকে কোনো খুঁিট ছাড় দেওয়া হয়নি। তিনি নিজেই প্রশ্ন তোলেন খুঁটিটি কোথা থেকে কিভাবে এলো তা এক রহস্য।

বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দুলাল হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, খুঁটি স্থাপনের ব্যাপারে আমার কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি এবং কোনো নোটশিটও অদ্যাবদি পাইনি আমি।

নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানিয়েছেন, জনস্বার্থে পুরাতন খুঁটি থেকে তার সরিয়ে নিতেই উক্ত নতুন খুঁটিটি বসানো হয়েছে। জনস্বার্থের কাজটি কার আবেদনের প্রেক্ষিতে করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি স্বীকার করেন যে, খুঁটিটি সরানোর বিষয়ে তিনি কোনো আগাম ঘোষণা বা পৌরকর্তৃপক্ষ অথবা সড়ক বিভাগের সাথে পত্রযোগাযোগ করেননি। অথচ বিধি অনুসারে ১১ হাজার কেভি লাইনের সংস্কারের জন্য এসব কর্তৃপক্ষকে আগেভাগেই অবহিত করা জরুরী।

বিষয়টি নজরে আনলে রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন জানিয়েছেন, ফুটপাত ভেঙ্গে খুঁটি বসানোর ক্ষেত্রে আমাকে কেউই কিছুই জানায়নি। আমি বিষয়টি নিয়ে চিঠি লিখবো সংশ্লিষ্ট উদ্বর্তন কর্তপক্ষের কাছে।

রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন জানিয়েছেন নিয়মানুসারে তার কাছে পত্র প্রেরণ করার কথা। কিন্তু তিনি কিছু জানেন না। বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, একটি চক্র এভাবে অনুমোদনহীনভাবে কাজ করে করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সূত্রমতে, শুধু এভাবে খুঁটি অপসারনই নয় অনুসন্ধান করা হলে বিদ্যুৎ বিভাগের এমন কিছু তথ্য বেরিয়ে আসবে যা অবাক হবার মতো।