শহীদ মিনারে ৬ দফা দাবিতে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের সমাবেশ : প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ

492

Untitled-20000

ঢাকা ব্যুরো অফিস, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫, দৈনিক রাঙামাটি : প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফেডারেশনের সমাবেশ থেকে শিক্ষানীতি অনুযায়ী শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রদান ও প্রধান শিক্ষকের নিচের ধাপেই বেতন স্কেল নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। সমাবেশ থেকে আগামী ৩১ জানুয়ারি ২০১৬-এর মধ্যে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফেডারেশনের ৬ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ১ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

আজ ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫, শনিবার, সকাল ১১টায় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সহকারী শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মো. জাহিদুর রহমান বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ৬ দফা দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রখেন অধ্যাপক এ এন রাশেদা, সাবেক ছাত্র নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, বীর মুক্তিযোদ্ধা হরেন্দ্রনাথ ম-ল, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমিন, বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি জসিমউদ্দিন সরকার, ফেডারেশন নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, মো. মনসুর আলম টিপু, আজিজার রহমান মিল্টন, এহসানুর আনসারী সায়েম, মো. আব্দুল হাই প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন বিজয় কুমার ঘোষ।

সমাবেশ থেকে, সরকারের প্রতি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে (১২, ৫০০ টাকা) পূনঃনির্ধারণ করা, সরাসরি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বন্ধ করে সহকারী শিক্ষক পদ থেকে নিয়োগ দিয়ে যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে বিভাগীয় পরীক্ষার মাধ্যমে মহাপরিচালক পদ পর্যন্ত শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির সুযোগ প্রদান করা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা পরিবর্তন করে মহিলা পূরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রী শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ঘোষণা করা এবং সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পূনঃবহাল করে দ্রুত পদোন্নতির ব্যবস্থা করা, নন-ভ্যাকেশনাল ডিপার্টমেন্ট হিসেবে ঘোষণা করে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য অর্জিত ছুটির বিধান প্রণয়নের দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে অধ্যাপক এ এন রাশেদা শিক্ষা বিষয়ে ইউনেস্কোর সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, জাতীয় বাজেটের অন্তত সাত শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের সরকার অন্য খাতে খরচ বেশি করলেও শিক্ষাখাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয়না। তিনি বলেন, রাজপথে শিক্ষকদের আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীন দেশে দাবি আদায় করতে হচ্ছে এটা আমরা ভাবতে পারি না। তিনি শিক্ষকদের এই আন্দোলনকে শিক্ষা আন্দোলনে রূপান্তরিত করার আহ্বান জানান।

সমাবেশে ঢাকা ঘোষণা পাঠ করেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমিন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, অবিলম্বে সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি, বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদা না দিয়ে কোনো জাতিই কখনো উন্নত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাবান্ধব সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমি আশা করব তিনি আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়ে বৈষম্যহীন মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষাদানের সুযোগ করবেন।

সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করতে গেলে মিছিল পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়। সেখান থেকে ফেডারেশনের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ৪নং গেইটে অপেক্ষমান কর্মকর্তার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান