৩৪বছরেও রাঙ্গামাটির ভূষণছড়া গণহত্যার বিচার হয়নি

692

স্টাফরিপোর্ট- ৩১ মে ২০১৮, দৈনিক রাঙামাটি (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি):  ১৯৮৪ সালের ৩১মে রাঙ্গামাটি জেলার ভূষণছড়ায় এক নির্মম হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছিল সন্তু লার্মার নির্দেশে। আজ ৩৪ বছর পার হলেও তার কোন বিচার বা তদন্ত ও হয়নি। ভূষণছড়ার নিরীহ চার শতাদিক বাঙালি হত্যার সাথে জড়িত সকল খুনীদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের দাবীতে অজ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদের  উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি ও পিবিসিপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ ফরাজি সাকিব। মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভুঁইয়া। বিশেষ আতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পাটির সহসভাপতি শহীদুর রহমান তামান্না, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মো. ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের যুগ্ন সম্পাদক শেখ আহাম্মদ রাজু, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হামিদ রানা, পিবিসিপির সিনিয়র সহসভাপতি মো: তৌহিদুল ইসলাম, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের দপ্তর সম্পাদক মো: খলিলুর রহমান, ছাত্রনেতা মো: তাফয়েজ, প্রমুখ।

প্রধান অতিথি তার বক্তবে বলেন, ১৯৮৪ সালের ৩১ মে, তৎকালিন তথাকথিত শান্তিবাহিনীর প্রধান সন্তু লারমার নির্দেশে মেজর রাজেশের নেতৃত্বে ভূষণছড়া গণহত্যা সংঘঠিত হয়। যা পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘঠিত হত্যাকান্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ এবং  যগন্য হত্যাকান্ড। যাকে বলা হয় ঐতিহাসিক ভূষণছড়া গণহত্যা। ১৯৮৪ সালের এই দিনে রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার বাঙালিরা এই নির্মম গণহত্যার শিকার হন। লেখক আতিকুর রহমানের লেখা বইয়ের তথ্য  অনুযায়ী ৩৭০জনের নাম পাওয়া যায়, তাছাড়া অনেকের চোখ ফাঁকি দিয়ে লাশ সড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। কারণ লাশ দেখলে সেখানে বাঙালিদের আর ধরে রাখা যেতনা। এখানেই শেষ নয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)এর অঙ্গ সংগঠন তথাকথিত শান্তিবাহিনীর হাতে অসংখ্যবার পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিরা গণহত্যার শিকার হয়েছে।

শান্তিবাহিনীর হত্যাকান্ডগুলোর মধ্যে রাজনগর গণহত্যা, পাকুয়াখালী ট্রাজেডি, মাটিরাঙ্গা গণহত্যা, ভূষণছড়া গণহত্যা উলে¬খযোগ্য। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েক শত বছরের ইতিহাস ঘাটলেও ভূষণছড়া গণহত্যার মতো এত বড় ধ্বংসযজ্ঞের আর কোন নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী পাষুরাও এখানে এমন জঘন্যতম ঘটনার জন্ম দেয়নি। যে ঘটনার মাধ্যমে মাত্র কয়েক ঘন্টা সময়ে হত্যা করা হয়েছে চার শতাধিক নিরস্ত্র নিরীহ মানুষ। এবং আহত করা হয়েছে আরও সহ¯্রাধিক মানুষ। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে একটি জনপদ। ১৯৮৪ সালের ৩০মে দিবাগত রাত আনুমানিক ৪টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা ৩০মিনিট পর্যন্ত ভূষণছড়ায় সংঘটিত হয়েছিল এ হত্যাযঘ্য । তিনি দাবী করেন, ঐ হত্যাকারীদের তাদের বিচার নিশ্চিত করা হোক।  এছাড়াও তিনি সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের ঘোষণা বাতিল করা ও পার্বত্য এলাকা থেকে সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ সকল অনির্বাচিত পদে দ্রুত নির্বাচন দাবী করেন।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।