৭দিনে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরীরতে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার ফরমূলা

481

স্টাফ রিপোর্ট- ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, দৈনিক রাঙামাটি (প্রেস বিজ্ঞপ্তি): স্বচ্ছ ভোটার তালিকা স্বচ্ছ নির্বাচনের একটি পূর্বশর্ত। জাতীয় নির্বাচেনর আগে হালনাগাদকৃত ভোটার তালিকা প্রার্থীদের হাতে তুলে দিতে হবে। প্রচলিত নিয়মে সেই কাজ করা ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ বিধায় আমরা একটা ফরমূলা পেশ করছি, যাতে ৭ (সাত) দিনের মধ্যে নিñিদ্রভাবে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরী করা সম্ভব।
আজ ২১ সেপ্টেম¦র বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ২য় তলার কনফারেন্স লাউঞ্জ এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয় জোট- বিএনএ’র চেয়ারম্যান ও তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারম্যান সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তার ঘোষণা পত্রে এ ফরমূলা পেশ করেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক তাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক আগামী ডিসেম্বরের পর আর অর্থায়ন করবে না। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ এই অবস্থায় সরকারি অর্থায়নে ১ জানুয়ারি থেকে ১ হাজার ৬১২ কোটি টাকার নতুন একটি প্রকল্প নিতে যাচ্ছে। এ প্রকল্পে বিভিন্ন শ্রেণির মোট ২ হাজার ২৪টি পদ এবং ১০ জন পরামর্শক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের কেনাকাটার জন্য ১ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচের প্রস্তাব করা হয়েছে। আমাদের মত একটি দেশের জন্য এমন বিশাল অংকের অর্থ ব্যয় অনেকটা নির্মমম বিলাসিতার শামিল। এই প্রকল্পের অধীনে স্মার্ট কার্ডের জন্য ফ্রান্সের অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি চুক্তি করে ইসি। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে ৯ কোটি স্মার্ট কার্ড পারসোনালাইজেশন করে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। পরে মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়। কিন্তু গত জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি উপজেলা পর্যায়ে ১ কোটি ৯৮ লাখ (১২ দশমিক ২০ শতাংশ) কার্ড পৌঁছাতে পেরেছে। আর ওই সময় পর্যন্ত কার্ড পেয়েছেন মাত্র ২ লাখ ৫৭ হাজার ভোটার।

প্রচলিত ভোটার তালিকা ৭ (সাত) দিনের মধ্যে নিশ্ছিদ্রভাবে স্বচ্ছ করা সম্ভব- ১। ইউনিয়ন পরিষদে ৯টি ওয়ার্ড রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে গড়ে ১৫০০ থেকে ২০০০ ভোটার রয়েছে। ২। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রয়েছে। ৩। নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যকে সভাপতি করে তার সাথে যারা বিগত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছে, তাদের প্রত্যেককে সদস্য করে একটি ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ কমিটি গঠন করতে হবে। ৪। অব্যবহিত পূর্বের ওয়ার্ড নির্বাচনের ভোটার তালিকা থেকে মৃত্যু কিংবা অন্য কারণে কোন ভোটারের নাম বাদ পড়বে বা কিংবা প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারণে কার নাম ভোটার হিসাবে যোগ হবে এ তথ্য নির্ণয় করাই হবে এই কমিটির একমাত্র দায়িত্ব। ৫। এটা নিশ্চিত করতে পারলে স্বচ্ছতার সাথে ওয়ার্ডের প্রত্যেকটি ভোটারের পরিচয় সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। কমিটির প্রতিটি সদস্য একে অন্যের বিরুদ্ধে সর্তক থেকে কারচুপি যাতে কেউ না করতে পারে সেদিকে নজর রাখবেন এবং সেই সঙ্গে তার নিজেহর ভোটার যাতে কোনো অবস্থাতেইও বাদ না পড়ে সেেিদক সর্তক দৃষ্টি রাখবে। একই কারণে বাইরে থেকেও কোনো ব্যক্তি এসে ভোটার তালিকায় তার নাম লিখাতে পারবে না। এভাবেই একটি স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণীত হবে। ৬। এই প্রক্রিয়ায় যাবতীয় খরব নির্বাচন কমিশন একটি বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওয়ার্ডের নির্দিষ্ট কমিটির কাছে ন্যস্ত করবে। ৭। ভোটার তালিকা সম্পন্ন করে ওয়ার্ড ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ কমিটি তালিকাটি একটি এনভেলাপে সিলগালা করে কমিটির প্রত্যেক সদস্যের স্বাক্ষরযুক্তে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করবে। ৮। ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি এনভেলাপ ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পাওয়ার পর এই ৯টি এনভেলাপ চেয়ারম্যান তার নিজস্ব অফিসিয়াল ফোল্ডারে ভরে সিলগালা করে থানা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরণ করবে। ৯। থানা নির্বাহী অফিসার তার থানার অধীনস্থ সমস্ত ইউনিয়নের সিলগালাকৃত ফোল্ডার তার নিজস্ব (ঈড়হভরফবহঃরধষ) ফোল্ডারে ভরে সিলগালা করে জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠাবে। ১০। জেলা প্রশাসক তার জেলার অধীন সমস্ত থানার ফোল্ডার তার নিজস্ব ঝবপৎবঃ ধহফ ঝঢ়বপরধষ ফোল্ডারে ভরে সিলগালা করে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করবে। ১১। নির্বাচন কমিশন ওয়ার্ড কমিটি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত হালনাগাদকৃত তালিকা তাদের উধঃধ ইধংব এ অন্তর্ভূক্ত করে বাংলাদেশ গ্যাজেট ও গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রকাশ করবে এবং ভোটার পরিচয়পত্র প্রণয়নে কাজে লাগাবে।

অনেক আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এসেছে। জনগণের শাসন গণতন্ত্রকে সুরক্ষা করা আমাদের সবারই পবিত্র দায়িত্ব। সর্বোপরি এ দায়িত্ব বর্তায় রাজনীতিবিদদের ওপর, যারা দেশ শাসন করে এবং আইন প্রণয়ন করে। ঐক্যমতের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দ্ধিান্তই বাংলাদেশে গণতন্ত্রে ক সূসংহত করতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমানে সমান শক্তিশাল ও ব্যাপক জনসমর্থনপুষ্ট দুটি রাজনৈতিক দল রয়েছে। গণতন্ত্র সুসংহত করতে বাংলাদেশের জন্য এটি দুর্লভ প্রাপ্তি। যা প্রয়োজন সেটি হচ্ছে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে উভয় সংগঠনের নিজস্ব গঠনতন্ত্রে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে এবং মাঠ পর্যায় থেকে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের সর্ব শীর্ষে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ক রতে হবে। প্রতিটি পর্যায়েই নির্বাচন এবং শুধুমাত্র নির্বাচনই হবে দলের নেতৃত্ব নিরূপণের একমাত্র অবলম্বন। দেশ গড়তে এ দুটি দল যদি পারস্পরিক সহযোগীতার ভূমিকা পালন করে তাহলে ১৭ কোটি মানুষেরএই দেশ বিশ্বের মানচিত্রের অন্যতম সমৃদ্ধশালী একটি দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ”

বাংলাদেশ জাতীয় জোট-বিএনএ-র কো-চেয়ারম্যান (বিএলডিপি)-র চেয়ারম্যান এবং সাবেক মন্ত্রী জনাব এম. নাজিম উদ্দীন আল-আজাদসহ জোটের সাধারণ সম্পাদক মেজর ডা. শেখ হাবিবুর রহমানসহ বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জোট-বিএনএ-র জাতীয় নেতৃবৃন্দের কৃষক-শ্রমিক পাটির্র চেয়ারম্যান লায়ন সালাম মাহমুদ, গণতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলন চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফ আলী হাওলাদার, বাংলাদেশ আওয়ামী পার্টি সভাপতি আমান উল্লাহ শিকদার, বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টির সভাপতি-মুফাসসির অধ্যাপক বজলুর রহমান আমিনী, বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টির চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ শামীম, সম্মিলিত নাগরিক পার্টির চেয়ারম্যান ম্যানুয়েল সরকার, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টির চেয়ারম্যান ডা. জুয়েল চিশতী প্রমূখ!

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।