স্টাফরিপোর্ট- ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, দৈনিক রাঙামাটি (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি): পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শিল্প-সংস্কৃতি চর্চায় সম্পৃক্ত করাসহ মূল ধারায় আনয়নের লক্ষ্যে প্রথমবারের মত ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শেষ হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ‘যুক্তির আলোয় দেখি’। আজ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর এফডিসিতে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন, রানার আপ ও তৃতীয় স্থান অধিকারী দলের শিক্ষার্থীদের এক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রোকেয়া আফজাল রহমান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিশেষ অতিথি ছিলেন এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাষ্ট্রির চেয়ারম্যান ডা. শহিদুল কাদির পাটোয়ারী।
বছরব্যাপী আয়োজিত এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়। রানার আপ ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে যথাক্রমে ইডেন মহিলা কলেজ ও চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়। প্রতিযোগিতায় অন্যান্যের মধ্যে অংশগ্রহণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সেরা ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিতার্কিকরা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তত্ত¡াবধয়াক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রোকেয়া আফজাল রহমান বলেন, প্রতিবন্ধী মানুষেরা অপ্রতিবন্ধীদের তুলনায় সাধারণত বেশি মেধাবী হয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের হাতে তৈরি অনেক কুটির শিল্প খুবই সুনিপুন। তাদের সুরক্ষায় সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রদানে এগিয়ে আসা উচিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে সব সময় তাদের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। প্রয়োজন অনুযায়ী যথা সাধ্য করবার চেষ্টা করব।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আমি মনে করি সরকারি চাকুরিসহ সর্বক্ষেত্রে প্রকৃত প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য চাকুরিতে ৩% থেকে ৫% কোটা রাখা উচিত। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান করলে তাদেরকে কর সুবিধাসহ প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া যেতে পারে। আগামী জাতীয় সংসদে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ভয়েস রেইস এর জন্য ২/৩টি সংরক্ষিত আসন রাখার যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় আমাদের সমাজ, সরকার, রাষ্ট্র আমরা কি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পেরেছি? আমি বলব না। এখনো আমরা আমাদের দেশে পারিনি। আমরা পারিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল বিল্ডিং এ প্রতিবন্ধীদের জন্য উঠা নামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প তৈরি করতে, পারিনি প্রতিবন্ধী বান্ধব ফুটপাত, ট্রাফিক সিগনাল তৈরি করতে, বাসে ও লঞ্চে উঠার জন্য আলাদা লেন করতে। শিক্ষার সকল স্তরে ব্রেইল লিখন পদ্ধতিতে বই ছাপতে, প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করতে। তাই তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী অধিকার রক্ষায় আমরা কেউই দায়িত্বশীল ভ‚মিকা পালন করতে পারিনি।
এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ভাতা বৃদ্ধি, বিশেষ বরাদ্দ, প্রয়োজনীয় শিক্ষা বৃত্তিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহŸান জানান। তিনি তার গণমাধ্যম এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারের উদ্যোগ নিয়ে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ক্রেষ্ট, ট্রফি ও সার্টিফিকেটসহ চ্যাম্পিয়ন দল ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিতার্কিকদের ২ লক্ষ টাকা, রানার আপ দল ইডেন মহিলা কলেজকে ১ লক্ষ টাকা এবং চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়কে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।