॥ সিয়াম হোসেন ॥
পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ ক্যাডারদের হুমকির মুখে ফ্রি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হলো গ্রামের দরীদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলাধীন দুর্গম হারিঙ্গাপাড়া এলাকায়। সোমবার বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণের জন্য এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করেছিল সেনাবাহিনী।
পাঁচ শতাধিক লোকের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধসহ বিশেষজ্ঞ তিনজন চিকিৎসক নিয়ে স্বাস্থ্য সেবা ক্যাম্পের আয়োজন করা হলেও- অস্ত্রধারীদের হুমকির কারণে চিকিৎসা নিতে আসতে পারেনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ। সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করা হলেও চিকিৎসা নিতে পারে মাত্র ২৪ জন গ্রামবাসী।
খবর নিয়ে জানা গেছে, হারাঙ্গিপাড়ার আশেপাশের গুটি কয়েক মানুষ ভয়ভীতি উপেক্ষা করে চিকিৎসা নিতে আসলেও দূরের লোকজনকে অস্ত্রধারীরা ভয় দেখিয়ে আটকে রাখে। কয়েকজন গ্রামবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভয়ে ভয়ে এ তথ্য জানান।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র ও ডাক্তার নিয়ে উঁচু-নিচু ও খাড়া পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে কাউখালী উপজেলার হারাঙ্গিপাড়া এলাকায় পৌঁছে রাঙামাটি সদর সেনা জোনের মেডিকেল টিম। দুর্গম ওই এলাকার মানুষ দুর্গমতা ও দারিদ্রতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত রয়েছে; এমন খবর পেয়ে সেখানে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনার উদ্যোগ নেয় রাঙামাটি সদর সেনা জোন।
মেজর মিনহাজুল আবেদিনের নেতৃত্বে গাইনি বিশেষজ্ঞ মেজর জান্নাতুন নাঈম ডিজিও, সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: আবীর দাস ও মেডিকেল অফিসার ক্যাপ্টেন নাহিদা আকতারসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা সকাল ৯টার মধ্যেই হারাঙ্গীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে পৌঁছায়। সাথে ছিল একদল গণমাধ্যম কর্মীও।
কিন্তু দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করেও সেখানে ২৪ জনের বেশি সেবাপ্রার্থী না আসায় হতাশ হন চিকিৎসক ও গণমাধ্যম কর্মীরা। পরে জানা যায়, ইউপিডিএফ গ্রামবাসীকে সেনাবাহিনীর স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ না করতে কঠোরভাবে বারণ করে বলেছে, যারা স্বাস্থ্যসেবা নিতে যাবে পরে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
এসময় মেডিকেল টিম কর্মকর্তারা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাহাড়ে সবসময় অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য নানামুখি সেবাধর্মী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু কুচক্রি মহল সেনাবাহিনীর সাথে এলাকাবাসীর দরত্ব বাড়াতে এমন হীন চক্রন্ত করে দরীদ্র জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করলো’।
সেনা কর্মকর্তারা জানান, ‘এর পরও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের জন্য সেনা সদস্যদের মানবিক উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।






























