॥ মোঃ হান্নান ॥
জাতীয় সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেছেন, প্রশাসনের আইনশৃঙঙ্খলা প্রতিবেদনই বলে দিচ্ছে আমরা কতটা শান্তিতে আছি। প্রকৃতপক্ষে রাঙামাটি জেলার জনগণ শান্তিকামী। সম্প্রীতির মেলবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এখানকার মানুষ একে অপরের সাথে বসবাস করতে প্রয়াসি।
কিন্তু মাঝে মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য কেউ কেউ ইচ্ছা করে কিছু নতুন ঘটানোর চেষ্টা করে। এ সম্পর্কে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। সাম্প্রতিক কালের কিছু ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে এমপি বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের তড়িৎ পদক্ষেপ প্রশংসনীয়।
রোববার বিকেলে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় জাতীয় সংসদ সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির উপদেষ্টা ফিরোজা বেগম চিনু এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা নেতাকর্র্মীদের বাধা প্রদান কোন রাজনৈতিক সংস্কৃতি হতে পারে না। ভিন্ন মত থাকতে তাই গণতান্ত্রিক অধিকার হরণকারীরা কখনও এ অঞ্চলের শান্তি চায় না।
তিনি আগামী ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স সফল করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
জেলা প্রশাসক মোঃ মানজারুল মান্নান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভাল, অপরাধ কমে আসছে। তারপরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বিভিন্ন উস্কানিমূলক পোষ্ট দিয়ে সম্প্রীতি নষ্ট করার পায়তারা করতে পারে। যদি সেরকম কোন কিছু নজরে পড়ে তাহলে সাথে সাথে প্রশাসনকে জানাবেন।
তিনি বলেন, শহরে মাদক নিয়ন্ত্রন অভিযান আরো জোরদার করতে হবে। যে স্পটগুলোতে মাদকের অবাধ ব্যবহার হয় তা চিহ্নিত করে অভিযান চালাতে হবে। তিনি ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের সকলের উপস্থিতি কামনা করে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এদিন যে যার মত করে সুবিধাজনক স্থানে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিতে হবে। যেসমস্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐদিন ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিবে না, তাদেও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশের বিরোধীতার দায়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, জেলা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। স্বাভাবিক রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দূর্গাপুজা, কঠিন চীবরদান ও জগদাত্রী মেলা সুন্দরভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি রাঙামাটি বাসির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, রাঙামাটিবাসী প্রকৃতপক্ষে শান্তিতে বসবাস করতে চায়। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রযেছে।
পৌরমেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, পৌর এলাকার উন্নয়নে ও মাদকমুক্ত সুন্দর শহর গড়তে রাঙামাটি পৌরসভা সর্বদা প্রস্তুত। প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা। আমরা একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছি। সুন্দর শহর হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা সচেষ্ট। মাদক দুরীকরণে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। অকালে যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে এাঁ কারোরই কাম্য নয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোয়াজ্জম হোসাইন এর সঞ্চালনায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান এর সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা ও মাসিক সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদায়ি ডিজিএফআই অধিনায়ক কর্ণেল এমদাদ উল্লাহ ভূইয়া, নবনিযুক্ত অধিনায়ক কর্ণেল মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, জেলা পরিষদ সদস্য অমিত চাকমা রাজু, পৌরমেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান অরুণ কান্তি চাকমাসহ জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সভায় স্থায়ী ডুবুরি নিয়োগ, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে নিয়মিত খেলাধুলা আয়োজন, গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে স্পীডব্রেকার স্থাপন, ফিটনেসবিহীন ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, অদক্ষ চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গস্খহণসহ সড়ক দূর্ঘটনা রোধ, মাদকমুক্ত শহর, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, শব্দ দূষন, বাজার ব্যবস্থাপনা, রাস্তা প্রসস্তকরণ ও জঙ্গিবাদ রোধের বিষয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে ডিজিএফআই এর নবনিযুক্ত অধিনায়ককে বরণ ও বর্তমান অধিনায়ককে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়া হয়।