লকডাউনে চরম বিপাকে রাজস্থলীর কামার সম্প্রদায়

343

|| রাজস্থলী প্রতিনিধি ||

নিজ দোকানে গ্রাহকের উপেক্ষায় মানুষের মতো লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন রাজস্থলী উপজেলার, রাজস্থলী বাজার, বাঙালহালিয়া বাজারের কামার সম্প্রদায়। এই সময়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে এলাকার কর্মকারের পরিবার। নিজ দোকান ও ভাড়া দোকানে কাজ করেন তারা, তবে লকডাউনে কাজ না থাকায় বেশিরভাগ কামার ঘরে বসে আছেন। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। কেউ কেউ জীবিকার তাগিদে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বসলেও মিলছে না ক্রেতা। করোনা ঠেকাতে চলমান লকডাউনে বন্ধ রয়েছে কাজ। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষেরা বেশ বেকায়দায় পড়েছেন।

রাজস্থলীতে কামার সম্প্রদায়ের জন্য এই লকডাউন ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজের অসহায়ত্বের কথা জানাতে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক (কামার সম্প্রদায়) বলেন, লকডাউন হওয়ার পর থেকে মানুষ দা, বটি, কুড়াল কিনতে আসেনা। অন্যদিকে দোকান পাট বন্ধ রাখতে হয়। যার ফলে আয়-রোজগার নেই বললেই চলে। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন চালানো দায় হয়ে পড়েছে। এক শ্রমিক বলেন, আগে দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হলেও বিধিনিষেধের ফলে দিনে ১০০ টাকা রোজগার করা অনেক কঠিন। ঘরে চাল নেই, চাল নিলে ঘরে রান্না হবে। কিন্তু এখনও ৪০ টাকার কাজ করতে পারিনি। চাল ডাল কিনব কী দিয়ে আর অন্য কিছুই বা কিনব কীভাবে? সকালে একটা রুটি একটা চা খেয়ে এসেছি। কথা হয় আরেক কর্মকারের সাথে তিনি বলেন, সারাদিনে ১০০ টাকা বিক্রি করতে পারিনি।

গতকাল সকালে ৫০ টাকা আর দুপুরের পর ৬০ টাকা, এই মোট ১১০ টাকার মালামাল বিক্রি করতে পেরেছি । এতে চারজনের সংসারের বাজার করেছিলাম। মানুষ ঘর থেকে বের হয়না । যাদের অনেক দরকার তারাই শুধু বের হয়। তাও হাতে গোনা। স্থানীয় কামার ব্যাবসায়ীরা জানান, এখানে সবাই মিলে প্রায় ৩০ জন দোকানদার আছে। কারোর কাজ নেই। সবাই মিলেও দুই হাজার টাকা মনে হয় রোজগার করতে পারেনি। কাজ না থাকায় মানুষ বাজারে আসে না। আবার অনেকে দুপুর পর্যন্ত থেকে চলে গেছে।

মিন্টু নামে এক কামার জানান, করোনার প্রথম প্রথম কিছু সরকারি সহযোগিতা পেয়েছি। লকডাউন শুরুর পর আর কোনো সহযোগিতা পাইনি। সরকারি সহযোগিতা আমাদের জন্য সোনার হরিণের হয়ে দাড়িঁয়েছে। সরকারের কাছে সহযোগিতা চাওয়া ছাড়া আমাদের মুক্তি কেউ দিতে পারবে না। রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ ছাদেক বলেন, কর্মহীন যারা বিপাকে রয়েছে তাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সহায়তার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বরাদ্দ অনুযায়ী অসহায় মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করছি।